মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:৩৫
ব্রেকিং নিউজ

নাটোরের উত্তরা গণভবন হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ায় সুশোভিত সুরভিত

নাটোরের উত্তরা গণভবন হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ায় সুশোভিত সুরভিত

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : জেলার উত্তরা গণভবনে এখন হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার ভরা মৌসুম। সাতটি করে হৈমন্তি আর ম্যাগনোলিয়ার রুপে রসে গন্ধে অনন্য হয়ে উঠেছে উত্তরা গণভবনের আঙিনা। এছাড়া দু’টো হোয়াইট এলামন্ড গন্ধ বিলিয়ে যাচ্ছে। ফুলের কানে ভ্রমরের গুঞ্জনে মোহনীয় চারিদিক।

অপরুপ স্থাপত্য শৈলীর রাজপ্রাসাদ আর বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসা অসাধারণ সব সামগ্রীর সংগ্রহশালাকে ছাড়িয়ে যায় গণভবনের দুস্প্রাপ্য কিছু গাছের সমাহার। এর বেশীরভাগটাই ফুল গাছ। এরমধ্যে পারিজাত, ম্যাগনোলিয়া, নাগালিঙ্গম, এগপ্লান্ট, হোয়াইট এলামন্ড, সুরভিকা আর হৈমন্তি অন্যতম। এসব ফুল গাছের উপস্থিতি জানান দেয়, উত্তরা গণভবন শুধু রাজপ্রাসাদই নয় সুবিশাল পুষ্প সাম্রাজ্যও বটে।

এরমধ্যে পারিজাত চক্রাকারে পাতার রঙ পাল্টিয়ে লাল রঙের ফুলের থোকায় পরিণত হয় বসন্তে। এগপ্লান্টে প্রায় সারা বছর দু’একটা ফুল থাকলেও শীত আর বর্ষা এর ভরা মৌসুম। নাগালিঙ্গম আর ম্যাগনোলিয়া বসন্তে ফুটলেও বিস্তৃতি বর্ষাকাল পর্যন্ত। রাজার প্রিয় ফুল সুরভিকা ফোটে মূলত শীতকালে। গ্রীষ্মের তাপদাহকে উপেক্ষা করে হোয়াইট এলামন্ড তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে এখন।

আর বসন্তে পাতা হারিয়ে হৈমন্তি গাছগুলো হয়ে পড়ে বিবর্ণ। বসন্তের শেষার্ধে ফুল আসতে শুরু করলেও গ্রীষ্মে হৈমন্তির রুপ হয়ে ওঠে অপরুপ। সারাগাছ জুড়ে ফুল আর ফুল, কোন পাতা নেই। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে এ যেন শুভ্র সুন্দর শান্তির পরশ। গ্রীষ্মের এ ফুল সুবাস ছড়াবে অন্তত দুই মাস। এটিই হৈমন্তির ভরা মৌসুম। শরতে আরো একবার হৈমন্তি শুভ্র সুন্দর হয়ে ওঠার চেস্টা করে। তবে এত ফুলের প্রাচুর্য আর সুবাস তখন থাকে না।

গণভবনের সিংহ দুয়ার পেরিয়ে সোজা এগিয়ে গেলে ইটালিয়ান গার্ডেনের প্রবেশপথের আগে দাঁড়িয়ে আছে একটি হৈমন্তি। ইটালিয়ান গার্ডেনে একটি, হরিণনিবাসে একটি, সংগ্রহশালার সাথে একটি, রাজপ্রাসাদের সামনে দুইটি হৈমন্তি গাছ। আর রাণীমহলে একটি হৈমন্তি গাছ। ধীরে বর্ধনশীল হৈমন্তির সাতটি গাছের মধ্যে রাজপ্রাসাদের সামনের গাছটি ফুলে ফুলে সবচে’ সমৃদ্ধ। রাণীমহলের গাছটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রোপণ করেছিলেন বলে জেলা প্রশাসন একটি ফলক দিয়েছে। সাবেক জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন এর সময়ে মৃতপ্রায় হৈমন্তি গাছটি বাঁচিয়ে তুলতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় আর নামফলক দে’য়া হয়। বিগত কয়েক বছরের পরিচর্যায় মৃতপ্রায় গাছটি ফুলে ফুলে ছেঁয়ে যাচ্ছে।

দুষ্প্রাপ্য গাছের তালিকায় আছে ম্যাগনোলিয়া। এর সংখ্যাও সাতটি। কুমার প্যালেস এর সাথে একটি ছাড়া অন্য ছয়টি ইটালিয়ান গার্ডেনে। কাঁঠাল পাতার মত প্রায় পাঁচ মিটার উঁচুতে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাগনোলিয়ার প্রতিটি গাছে শত শত ফুলের কলি। ফুটতে শুরু করেছে বিরাট আকৃতির সাদা ফুল। আর সাদা ফুল মানেই তো সুবাস ছড়ানো উপস্থিতি।

ইটালিয়ান গার্ডেনকে সুশোভিত করে রাখে অতিকায় দু’টো হোয়াইট এলামন্ড। এখন শুধু সুশোভিতই নয় সারা গাছ জুড়ে সাদা ঝিরিঝিরি ফুল রাশি পুরো গার্ডেনকে সুরভিত করে রেখেছে।

হৈমন্তী, ম্যাগনোলিয়া আর হোয়াইট এলামন্ড গণভবনকে সুশোভিত সুরভিত করে রেখেছে। ঈদ আর নববর্ষের ছুটিতে প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীদের আগমনে মুখর উত্তরা গণভবনের আঙিনা। সৌন্দর্য পিপাসুদের মধ্যে অনেকেই গ্রীষ্মের এ তাপদাহে এসব ফুল গাছের তলায় দু’দন্ড শান্তির পরশ খুঁজে পাচ্ছেন।
উত্তরণবার্তা/এআর  

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ