রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:৩১

বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫১ বছর

বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫১ বছর

উত্তরণবার্তা  প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু সবসময় ছিলেন শান্তি ও শোষিতের পক্ষে। জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ এবং শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বিশ্ব দরবারে আদর্শ দেশের মর্যাদা লাভ করে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা আর শান্তি প্রতিষ্ঠায় ১৯৭৩ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হয় জুলিও কুরি পদক।

তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়েছিলেন সেই ১৯৬৯ এ। আর মুক্তিযুদ্ধ তাঁকে করেছে বাঙালির ‘অবিসংবাদিত নেতা’। নির্যাতিত, বঞ্চিত, অবহেলিত একটি জাতিকে দেখিয়েছিলেন মুক্তির পথ, দিয়েছিলেন স্বাধীনতা- জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।

ছাত্রজীবন থেকেই বিশ্বশান্তির পক্ষে পথচলা শুরু। রাজনীতির মাঠে নেমে হন আরো সক্রিয়। ভাষা আন্দোলনে কারাভোগ করা বঙ্গবন্ধু বায়ান্নর অক্টোবরে যোগ দেন চীনে অনুষ্ঠিত ‘পিস কনফারেন্স অব দ্য এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওন্স’এ। যেখানে ৩৭টি দেশের শান্তিকামী নেতাদের সাথে মতবিনিময়ে আরো তীব্র হয় তাঁর সংকল্প। ৫৬’র এপ্রিলে স্টকহোমে বিশ্বশান্তি পরিষদের সম্মেলনে- বঙ্গবন্ধু বলেন, ”বিশ্বশান্তি আমার জীবনের মূলনীতি। নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত ও স্বাধীনতাকামী সংগ্রামী মানুষ, যে স্থানেরই হোক না কেন, তাঁদের সঙ্গে আমি আছি”।

বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট উচ্চারণ- পৃথিবী দুভাগে বিভক্ত, আমি শোষিতের পক্ষে। দেশে-বিদেশে যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখেন, সেখানেই প্রতিবাদের ঝড় তোলেন মহানায়ক। বৈষম্য, দারিদ্র, বিচারহীনতা নিরসনে করেছেন আজীবন সংগ্রাম।

৭ মার্চের ভাষণেও শান্তিপুর্ণ দ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কোনো ধরণের অস্ত্র প্রতিযোগিতা নয়, বরং দুনিয়ার সকল শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে এগিয়ে চলছিল দেশ।

আজীবন জনগণের সেবায় জীবন উৎসর্গ করার দর্শন আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়কত্ব- এ বিবেচনায় ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপ্ত হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে বিশ্বশান্তি পরিষদ। প্রেসিডেনশিয়াল কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তে একমত হন ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্য।

পরের বছর ২৩ মে বাংলাদেশে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে পদক পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র।

সেই অনুষ্ঠানে রমেশচন্দ্র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’ স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK