শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১১:৪৪

সারা বছর সতীর্থ, আজ তারা শত্রু

সারা বছর সতীর্থ,  আজ তারা শত্রু

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : সময় কত দ্রুত চলে যায়। এই তো সেদিন শুরু হলো ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ। অথচ আজই ছুটি হয়ে যাচ্ছে কাতার আসরের। শুরুর দিন থেকে যে ক্ষণটির অপেক্ষায় বুদ হয়ে আছে পুরো ফুটবল দুনিয়া, আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় স্বপ্নের সেই ফাইনাল। যে ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যুদ্ধে নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। দোহার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে দুই দলের দলীয় সেই যুদ্ধে অনেক ব্যক্তিগত খণ্ড যুদ্ধও হবে। যে খণ্ড যুদ্ধগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হবে সতীর্থদের যুদ্ধ। ক্লাব ফুটবলে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের অনেক ফুটবলারই কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে সারা মৌসুম একই ক্লাবে খেলেন। কিন্তু সতীর্থ-বন্ধুত্বের সেই সম্পর্ককে দূরে সরিয়ে আজ তারা হয়ে যাবেন একে অন্যের শত্রু। পাস দেওয়ার পরিবর্তে আজ প্রতিযোগিতা করবেন একে অন্যের পা থেকে বল কেড়ে নিতে। এই প্রতিবেদনে আমরা দেখব দুই দলের কে কার ক্লাব সতীর্থ, যারা আজ শত্রু হয়ে সম্মুখ যুদ্ধ করবেন।

১. লিওনেল মেসি বনাম কিলিয়ান এমবাপ্পে

তারকাখ্যাতি আর পারফরম্যান্স ভিত্তিতে এই দুই জনের দিকেই আজ সবার দৃষ্টি থাকবে বেশি। নিজ নিজ দলের সবচেয়ে বড় ভরসাও তারা। পুরো আর্জেন্টিনা যেমন মেসির দিকে তাকিয়ে থাকবে, তেমনি ফরাসিদের ভরসারপাত্র এমবাপ্পে। দুই জনে একই ক্লাবে খেলেন। ক্লাব পিএসজিতে তারা একে অন্যকে গোল বানিয়ে দেন, গোলের পর উদ্যাপনও করেন একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে। কিন্তু সেই মধুর সম্পর্ক ভুলে আজ তারা চরম শত্রুর ভূমিকায়। পুরো চেষ্টা করবেন একে অন্যের সর্বনাশ করার। দলকে শিরোপা জেতানোর পাশাপাশি মেসি-এমবাপ্পের মধ্যে কিছু ব্যক্তিগত দ্বৈরথও থাকবে। দুই জনেই কাতারে আলো ছড়িয়েছেন। নিজ নিজ দলকে ফাইনালে তুলতে দুই জনেই গোল করেছেন সমান পাঁচটি করে। সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে তারাই। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল পাওয়ার দৌড়েও আছেন দুই জনেই। সুতরাং শত্রু হয়ে দুই সতীর্থের লড়াইটা আগুনতপ্তই হবে।

২. আঁতোইন গ্রিজমান বনাম রদ্রিগো ডি পল, নাহুল মলিনা, আনহেল কোরেয়া

ফ্রান্স দলের ফরোয়ার্ড আঁতোইন গ্রিজমান খেলেন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদে। মাদ্রিদের এই ক্লাবটিতেই খেলেন আর্জেন্টিনা দলের তিন জন-রদ্রিগো ডি পল, নাহুল মলিনা ও আনহেল কোরেয়া।  মানে এই তিন জনই আজ গ্রিজমানের শত্রু বনে যাবেন। তবে এর মধ্যে আনহেল কোরিয়া এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচে মাঠে নামেননি। ফলে আজও তার নামার সম্ভাবনা কম। কিন্তু রদ্রিগো ডি পল ও মলিনার সঙ্গে সরাসরিই মাঠে যুদ্ধ হবে গ্রিজমানের। এর মধ্যে রদ্রিগো ডি পলের সঙ্গে গ্রিজমানের লড়াইটা হবে মাঝমাঠের দখল নেওয়া নিয়ে। ডি পল আপাদমস্তক মিডফিল্ডার। গ্রিজমান এমনিতে ফরোয়ার্ড হলেও পগবা-কন্তেদের শূন্যতা পূরণে কাতার বিশ্বকাপে মিডফিল্ডারের ভূমিকাতেই খেলছেন। বদলে যাওয়া এই নতুন ভূমিকাতেও তিনি দারুণ সফল।

৩.  ক্রিস্টিয়ান রোমেরো বনাম হুগো লরিস

রোমেরো আর্জেন্টিনার রক্ষণের অন্যতম সেনানি। হুগো লরিস সামলাচ্ছেন ফ্রান্সের গোলপোস্ট। গ্লাভসের পাশাপাশি ফ্রান্সের অধিনায়কত্বের আর্মব্র্যান্ডও তার বাহুতে। তো দুই দলের এই দুই জনেই ইংলিশ ক্লাব টটেনহামে খেলেন। গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডার বলে ক্লাবের জার্সি গায়ে খেলার সময় তারা খুব কাছাকাছিও থাকেন। ফলে একে অন্যকে প্রায়ই মাঠের বীরত্বের জন্য বাহাবা জানান। কিন্তু সতীর্থ-বন্ধুত্ব ভুলিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনাল আজ তাদের বানিয়ে দিচ্ছে শত্রু।

৪. আদ্রিয়ান রাবিওত বনাম আনহেল ডি মারিয়া, লিসান্দ্রো পারেদেস

ফরাসি মিডফিল্ডার আদ্রিয়ান রাবিওত খেলেন জুভেন্টাসে। এই ইতালিয়ান ক্লাবটিতেই খেলেন আর্জেন্টিনা দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আনহেল ডি মারিয়া ও লিসান্দ্রো পারেদেস। সুতরাং সতীর্থ নয় আজ তারা শত্রু। যদিও রাবিওত আজ ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, ঠান্ডাজনিত ভাইরাসের কারণে মরক্কোর বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি। গতকাল পর্যন্তও খবর, তিনি সুস্থ হননি। যদি মাঠে না নামেন তাহলে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই দুই ক্লাব সতীর্থ ডি মারিয়া, পারেদেসদের সর্বনাশ কামনা করবেন। মাঠে নামলে তো যুদ্ধটা হবে সামনাসামনিই।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK