রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৭:৪১
ব্রেকিং নিউজ

ঈদ কেনাকাটায় দেশীয় ব্র্যান্ডের দোকানে ভিড়

ঈদ কেনাকাটায় দেশীয় ব্র্যান্ডের দোকানে ভিড়

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : ঈদের কেনাকাটা পুরোদমে জমে উঠেছে। ঈদ উপলক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সবকিছুই টুকিটাকি করে কেনা চাই। এর মধ্যে রয়েছে ঈদের প্রধান আকর্ষণ নতুন পোশাক এবং তার সঙ্গে মিলিয়ে জুতা-স্যান্ডেল, সাজগোজের সামগ্রী। গতকাল ছিল রমজানে দ্বিতীয় সরকারি ছুটির দিন। ফলে সকাল থেকেই শপিংমলগুলোতে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়।

ঈদবাজার ঘুরে দেখা যায়, মধ্যবিত্তের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে দেশীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের প্রাধান্য। তবে কিছু দেশীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি মিশ্র ব্র্যান্ডের প্রাধান্যও চোখে পড়ে। মধ্যবিত্তের পছন্দের প্রথম ধাপে রয়েছে—আড়ং, ইয়েলো, সেইলর, লা-রিভ, সারা, অঞ্জন’স, ক্র্যাফট, নিপুণ, নগরদোলা ও দেশাল। এর মধ্যে আড়ংয়ে ভিড় দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। সকাল থেকে কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে ক্রেতা সমাগম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। দুপুর নাগাদ প্রতিটি ফ্লোরে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে মেয়েদের পোশাক ও ছেলেদের পাঞ্জাবির দোকানে ভিড় দেখা যায়।

কথা হয় মোহাম্মদপুর কাদিরাবাদ হাউজিং থেকে শপিং করতে আসা দুই ক্রেতার সঙ্গে। তারা তাদের পরিবারের মায়েদের জন্যে শাড়ি কিনছিলেন। সুতি সাদা শাড়ি কিনেছেন তারা। তাদের এক জন বলেন, ‘এখন আমরা এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আছি যে, বাবা-মায়েদের পোশাকও খুব পছন্দে কিনতে পারছি না। শাড়ি পছন্দ করতে হচ্ছে দাম দেখে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও তাই, দাম দেখে বাচ্চাদের পোশাক পছন্দ করতে হচ্ছে। কারণ কিছুটা কম দামে পোশাক কেনা। কিন্তু সস্তায় বা কম দামে খাবার কিনে খাওয়া যায় না।’ পাশ থেকে অন্য এক নারী ক্রেতা একই কথা বলেন, ‘ঈদের নতুন কাপড় কেনা লাগে তাই কেনা। কিন্তু মাকের্টে এসে পছন্দমতো শাড়ি-পোশাক কিনতে পারছি না দাম চড়া হওয়ার কারণে।’

এদিকে রোজার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সেলাইবিহীন থ্রিপিসের দোকানে ভিড় দেখা যায় নারীদের। যারা তাদের পোশাকটি দর্জির কাছে সেলাই করে তৈরি করে নিতে চান, তারাও এখনো ছুটছেন মাকের্টে। কারণ এর পাঁচ/সাত দিন পরই দর্জির দোকানে পোশাক বানানো অর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে। নামিদামি কিছু টেইলারে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে কাপড় নেয়া। এ আর প্লাজা, বসুন্ধরা সিটি, জেনেটিক প্লাজা, রাপা প্লাজা ঘুরে দেখা যায় বেশ ভিড়।

এখন আর কোন থ্রিপিসের ডিজাইন বেশি চলছে তা বলার নেই। সব ধরনের পোশাক পরার ট্রেন্ড চলছে। কেউ পরছে পাকিস্তানি স্টাইলে বেশি ঢিলেঢালা কামিজ। সেটি শর্ট কামিজও হতে পারে, আবার লং কামিজও হতে পারে, সঙ্গে প্লাজো কিংবা প্যান্টকাট পায়জামা। চলছে নায়রা, সারাহ, আলিয়াকাট পোশাক। এসব পোশাক রেডিমেড কিনলে তো কোনো কথাই নেই।

বসুন্ধরার চতুর্থ তলায় আনস্ট্রিচ থ্রিপিসের দোকানে কথা হয় এক আমেরিকা প্রবাসীর সঙ্গে। তিনি জানান, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের জন্যে থ্রিপিস দেখছেন। পোশাকের ছবি তুলে ভাইবারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, তা দেখে ভালোমন্দ মন্তব্য করছে তার স্ত্রী। দোকানিরা বলছেন, ঈদের নারীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে গাঢ় রঙের পোশাক। গাঢ় নীল, লাল, কালো, অরেঞ্জ, টিয়া, বেগুনি রংগুলো বেশি চলে। এর পাশাপাশি হালকা রংগুলোর প্রতিও আগ্রহ দেখা যায় একটু বেশি বয়সি নারীদের। মা-খালার জন্য সব সময় হালকা রঙের পোশাক কিনে থাকেন সবাই। যে কারণে ঈদে হালকা ও গাঢ় দুটি রঙের প্রাধান্যই থাকে বেশি। তবে গরমের কারণে আরামদায়ক কাপড়ের দিকেই ঝুঁকে থাকেন ক্রেতারা। গরমে ঈদ হওয়ার কারণে সুতি, লিলেন, খাদি, এন্ডি কটন, ভয়েল, এন্ডি সিল্ক কাপড়ের পোশাকের চাহিদা বেশি।

এসব কাপড়ের মধ্যে হালকা কাটওয়ার্ক, এমব্র্রয়ডারি, ডলার বসানো কাজের কাপড়ের প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। ডিজাইনের পাশাপাশি ফ্যাশন হাউজগুলো পোশাকে ব্যবহার করেছে উজ্জ্বল রং ও উজ্জ্বল রঙের সুতা। সুতি কাপড়ের পরিবর্তে লিলেন চলছে বেশি। পাশাপাশি এন্ডি সুতি, এন্ডি সিল্ক কাপড়ের প্রাধান্য রয়েছে। সঙ্গে চলছে প্লাজো আর প্যান্টকাট পায়জামা। এসব কাপড়ের মধ্যে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারির কাজ, এর সঙ্গে স্টোন ও ছোট চুমকির কাজের থ্রিপিসগুলো চলছে বেশি।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK