রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৬:১৪
ব্রেকিং নিউজ

প্রশ্নফাঁসের গুজব ঠেকাতে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে নজরদারি থাকবে

প্রশ্নফাঁসের গুজব ঠেকাতে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে নজরদারি থাকবে

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : আগামী ৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পরীক্ষা চলাকালীন ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে যে কোনো ধরনের গুজব, অনৈতিকভাবে তথ্য সরবরাহ বা আর্থিক লেনদেন নজরদারিতে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটি সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি।শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, প্রশ্নফাঁসের গুজবে আপনারা কান দেবেন না। প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। যারা এসব গুজব বা অপপ্রচার চালাবে তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করবেন।


এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বিটিআরসি পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালে ফেসবুকে প্রশ্নফাঁস নিয়ে গুজব এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সন্দেহজনক লেনদেন নজরদারি রাখা হবে।তিনি আরও বলেন, সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের পেজ দ্রুত বন্ধ করা হবে। এজন্য ফেসবুকসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করবে। যদি কোনো মোবাইল নম্বরে একাধিকবার একই অংকের টাকা লেনদেন হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টকে নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে। এছাড়াও প্রশ্ন ছাপানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত বিজি প্রেসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হবে। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে মঙ্গলবারের সভায় ২৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালীন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইল ব্যাংকিং নজরদারি করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়।

>> এবার পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হবে এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী বিলম্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে, তাঁর নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

>> আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা-২০২৩ সুষ্ঠু, সুন্দর ও প্রশ্নফাঁসের গুজবমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

>> কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।

>> ট্রেজারি-থানা হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীগণ কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাঁচ যুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোন যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

>> প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ প্রদান করা হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত হতে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশ প্রহরায় সকল সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।

>> পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।

>> প্রশ্ন ছাপানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত বিজি প্রেসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হবে।

>> জেলার ক্ষেত্রে ট্রেজারি এবং উপজেলার ক্ষেত্রে খানার প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক সংরক্ষণ করতে হবে।

>> ট্রেজারিতে রক্ষিত প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর তিন দিন পূর্বে দিন ভিত্তিক ও সেটভিত্তিক সর্টিং করে সিকিউরিটি খামে সংরক্ষণ করতে হবে।

>> পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ অন্যান্য সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের পেজ দ্রুত বন্ধ করা হবে। এজন্য ফেসবুকসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করবে।

>> প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের নিকট উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তি যদি কোনো মোবাইল নম্বরে একাধিকবার একই অংকের টাকা লেনদেন করেন তাহলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টকে নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।

>> পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে সর্ব সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

>> কোনো প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক কোনোভাবে পরীক্ষায় বেআইনি কোনো কাজ করলে সে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষী শিক্ষক ও কর্মচারী সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলে তার এমপিও স্থগিত করা হবে।

>> ট্রেজারি/থানা থেকে প্রশ্ন কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য দূরত্ব অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সময় নির্ধারণ করে প্রশ্নপত্র আনতে হবে।

>> আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।

>> ঢাকা মহানগরীতে ট্যাগ অফিসার মনোনয়ন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক, সে অনুযায়ী মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় সংখ্যক কলেজ/স্কুলের শিক্ষক মনোনয়ন দিয়ে তালিকা জেলা প্রশাসক, ঢাকার নিকট প্রেরণ করবেন।
উত্তরণবার্তা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ