রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৪:৩৩
ব্রেকিং নিউজ

‘বনানী বিদ্যানিকেতন হয়ে উঠেছিল বিজয়মঞ্চ’

‘বনানী বিদ্যানিকেতন হয়ে উঠেছিল বিজয়মঞ্চ’

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে উত্তরায়ণ একাডেমি ও বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ যৌথভাবে মহান বিজয় দিবস-২০২২ উদযাপন করেছে। ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে জনতা ব্যাংক, প্রাণ ও কর্মসংস্থান ব্যাংক। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে আজ শুক্রবার সকালে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রিয়াংকা হালদার শিখা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরায়ণ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলাম। অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ প্রিয়াংকা হালদার শিখা বলেন, বাংলাদেশি বাঙালি গর্বের ইতিহাসকে ধারণ করে। নতুন প্রজন্মের কাছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। শুধু পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা নয়, সহ-শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে। সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়েই মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়া যায়। উত্তরায়ণ এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তাতে আমরা সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চাই।

উত্তরায়ণ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলাম বলেন, ভৌগলিক স্বাধীনতা শুধু নয়, বাংলা ভাষা ,পতাকা উপহার দিয়েছেন আমাদের শহীদেরা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, নির্দেশে পরিচালিত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা তা পেয়েছি। যে মা সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন, যে বোন ভাইকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন, যে সন্তানরা তাদের পিতাকে মুক্তিযুদ্ধে যেতে বাধা দেননি তারাও মুক্তিযোদ্ধা। কণ্ঠসৈনিকরাও মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ জুগিয়েছেন গানে, আবৃত্তিতে। নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই।  একজন মানবিক মানুষ হতে হলে সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। তা পরিবার থেকেই শুরু করতে হয়। পরিবারে এই চর্চার উৎসাহ ও পরিবেশ থাকতে হবে। আজ এখানে অভিভাবকেরা যে অসংখ্য সন্তানকে নিয়ে এসেছেন-তাতে মনে হয়েছে উত্তরায়ণ সঠিক পথে এগোচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহন ছিল
ব্যাপক। আমি সেখানে তাদের অফুরান উচ্ছ্বাস দেখেছি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উত্তরায়ণ একাডেমীর সহ-পরিচালক হিমাদ্রী শেখর তালুকদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথি অধ্যক্ষ প্রিয়াংকা হালদার শিখাকে ফুল দিয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে শুভেচ্ছা জানান উত্তরায়ণ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক , বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী লিলি ইসলাম। শিল্পী লিলি ইসলামকেও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান অধ্যক্ষ প্রিয়াংকা হালদার শিখা। শুক্রবার অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরন করেন অনুষ্ঠানের অতিথি ও সভাপতি। প্রসঙ্গত: একই স্থানে অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন (১৫ ডিসেম্বর শনিবার) ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজিত হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় প্রায় দেড় শতাধিক শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতায় সম্মানিত বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত দুই শিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক ও কনক চাঁপা চাকমা।

শুক্রবার সকালে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উত্তরায়ণ একাডেমী ও বনানী বিদ্যা নিকেতনের শিক্ষার্থীরা একক ও সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন। শুরুতেই ছিল সমবেত রবীন্দ্রসঙ্গীত -‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা'। একে একে পরিবেশিত হয় দেশাত্মবোধক, নজরুলগীতি, ধামাইল গান। গানের কথা ও সুরে পুরো প্রাঙ্গণ হয়ে উঠে বিজয়মঞ্চ।অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন কাজী বুশরা আহমেদ তিথি। দুইদিন ব্যাপী এই আয়োজনে উত্তরায়ণ একাডেমির সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন শিল্পী লিলি ইসলাম। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেলো যারা: এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ‘ক’ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে ঘাসফুল শিশু পাঠশালার শিক্ষার্থী ফাবলিহা মোস্তাক আরওয়া, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বাফওয়া গোল্ডেন ঈগলস নার্সারীর ইনায়া  ইসরার সামারা, তৃতীয় স্থান পায় মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মালাইকা কায়েস।

‘খ’ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তরায়ণ একাডেমীর মাহির দাইয়ান আরাফ, দ্বিতীয় হয় মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মো: রেদওয়ান হোসেন, তৃতীয় হয় মোহাম্মদপুর সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শেখ রেশাদ আহমেদ। ‘গ’ বিভাগে প্রথম হয় ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তাজরিয়ান সিদ্দিক, দ্বিতীয় হয় বনানী বিদ্যানিকেতনের সামিয়া আফরিন সারা ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাইশা আহমেদ। ‘ঘ’ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হুমায়রা আদিবা, দ্বিতীয় হয় বনানী বিদ্যানিকেতনের দীপান্বিতা কুন্ডু ঐশি, তৃতীয় হয় একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনিশা ইসলাম।  বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে বনানী বিদ্যা নিকেতনের দ্বীপকথা বিশ্বাস, উত্তরায়ণ একাডেমীর মাহা সুলতানা, মনীষা দাস ও আনুশকা সামন্তী।
উত্তরণবার্তা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK