শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১০:২১
ব্রেকিং নিউজ

দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের আইসিটি শিক্ষা সম্প্রসারণ

দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের আইসিটি শিক্ষা সম্প্রসারণ

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : পরিবর্তিত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলায় সরকারের শীর্ষস্থানীয় প্রকল্প ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ একটি বৃহৎ কারিগরী দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি তৈরির লক্ষে আইসিটি শিক্ষা সম্প্রসারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশব্যাপী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষায়িত কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে সরকার বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থী এবং যুবক-যুবমহিলাদের জন্য কম্পিউটার ও মানসম্মত শিক্ষা সম্প্রসারণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভাষাগত দক্ষতা অর্জনকে বেগবান করছে। কর্মকর্তারা জানান, স্টেট-অব-দি-আর্ট কম্পিউটার কেন্দ্র স্থাপন করে ও আইসিটি’র সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার মান নিশ্চত করার মাধ্যমে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ পিএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পর্যায়ে মাল্টিমিডিয়া-ভিত্তিক শিক্ষার সম্প্রসারণ করছে। তারা আরো বলেন, ল্যাবটি ভাষা-নির্ভর ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসর্সিংয়ের পাশাপাশি অন্যান্য উপার্জনশীল দক্ষতা সৃষ্টির লক্ষে একটি আইটি সংশ্লিষ্ট ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৮ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ইতোমধ্যেই যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত হয়েছে, তাদের মধ্যে রাজশাহী রিভার ভিউ কালেক্টোরেট স্কুল অন্যতম। সরেজমিন পরিদর্শনকালে স্কুলটির ল্যাবটিতে ২৫টি কম্পিউটার দেখা গেছে। পদ্মার তীরবর্তী এই স্কুল ডিজিটাল প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতিতে সুসজ্জিত। শিক্ষার্থীদের আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে শ্রেণীকক্ষে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাজিরা দিতে হয়।দশম শ্রেণীর ছাত্রী জারমিন আক্তার টুম্পা স্কুলের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের একটি কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করছিল। টুম্পা জানায়, তার বাসায় কোন কম্পিউটার নেই। তাই সে স্কুল ল্যাবের কম্পিউটার থেকেই কম্পিউটার চালায়। সে আরো বলে, ‘আমার স্কুলে প্রথমবারের মতো কম্পিউটার স্পর্শ করা আমার জন্য অনেক উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। কিন্তু এখন আমি মাইক্রোসফট অফিস, মাইক্রোসফট এক্সেল, রেজাল্ট শিট তৈরি ও ইন্টারনেট ব্রাউজিং-এ আমার কিছুটা দক্ষতা অর্জন করেছি।’

স্কুলগুলোতে ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করায়, শিক্ষার্থীদের, বিশেষত যাদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়, তাদের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষার একটি দ্বার উন্মুক্ত হল। টুম্পা আরো জানায়, ‘যেসব শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার কেনার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই, তারা এখন স্কুল ল্যাব থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখতে পারছে।’ স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা মনোয়ারা পারভিন বলেন, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্কুল পর্যায় থেকেই কম্পিউটার শিক্ষার ওপর একটি সার্বিক ধারণা লাভ করছে। এছাড়া, তারা এতে আইসিটি জ্ঞানেও সমৃদ্ধ হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শ্রেণীকক্ষই ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদিতে সজ্জিত। তাই, শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশক শ্রেণী পর্যন্ত মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করছে। মনোয়ারা বলেন, ল্যাবটি শিক্ষার্থীদের আইসিটি-তে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করছে। এছাড়াও, এটি তাদেরকে বৈশ্বিক বাজারে কর্মসংস্থানের মতো উপযুক্ত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে যথেষ্ট সহায়ক।  

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পল অধীন ‘মেধা-ভিত্তিক জাতি’ গঠনের ঘোষণার সাথে সঙ্গতি রেখে সরকার দেশব্যাপী প্রতিটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপন করছে।তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ৩০ লাখ যুবক ও যুব-মহিলার জন্য কর্মসংস্থার সৃষ্টি ও ২০২৫ সাল নাগাদ আইসিটি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। সারা দেশে ৩৯টি হাই-টেক পার্ক, ৬৪টি শেখ কামাল আইটি ট্রেইনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, ৩শ’ স্কুল অব ফিউচার ও ৮ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এ লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।পলক বলেন, ‘আমরা দেশব্যাপী ২০২৫ সাল নাগাদ আরো ২৭ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও ৩শ’ স্কুলস অব ফিউচার স্থাপন করব।’তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি, প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও ৩শ’ স্কুলস অব ফিউচার স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও, ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় কোডিং এডুকেশন যুক্ত হচ্ছে।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK