মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ২১:০৪
ব্রেকিং নিউজ

জানুন অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে আপনার ত্বকের কি ক্ষতি আপনি করছেন

জানুন অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে আপনার ত্বকের কি ক্ষতি আপনি করছেন

সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ

অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে আপনি শুধু ডায়াবেটিসের ঝুঁকিই বাড়াচ্ছেন না, আপনি আপনার ত্বকের কোমলতা ও সৌন্দর্যও নষ্ট করছেন।

আমরা যখন খাবার খাই তখন আমাদের শরীর সেই খাবারকে ভেঙ্গে শক্তিতে রূপান্তর করে যাতে আমাদের শরীরের কোষ ঠিকমত কাজ করতে পারে এবং কোষ বৃদ্ধি হতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় সুগার মেটাবলিযম। খাঁটি চিনি বা উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচকের খাবার খেলে শরীরে ইন্সুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। ধীরে ধীরে শরীরের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা এবং ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্সের পরিবর্তন আসে।

ত্বক হচ্ছে আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ। শরীরে উচ্চ মাত্রার চিনি এবং ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্সের বৃদ্ধি ত্বকের উপরও প্রভাব ফেলে। নিয়মিত অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে শরীরে প্রদাহ বৃদ্ধি পায় যা ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি করে। প্রদাহ বাড়ার সাথে সাথে ত্বক লাল হয়ে যাওয়া এবং ফেটে যাওয়াও বৃদ্ধি পাবে।

বয়োবৃদ্ধি
চিনি হজমের পর তা গ্লাইকেশন (glycation) নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোষের প্রোটিনের সাথে স্থায়ীভাবে লেগে যায়। এর ফলে শরীরে এডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড (AGE) উপাদানসমূহ বেড়ে যায় যা ত্বকের কলাজেন ও ইলাস্টেন এর উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

ব্রণ
অতিরিক্ত মিষ্টি খেয়ে আপনি ব্রণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছেন। ব্রণ সৃষ্টির পেছেন হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শরীরে ইন্সুলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে তেল বৃদ্ধি পায় এবং এন্ড্রোজেন লেভেল বেড়ে যায়। এর ফলে ত্বক ফেটে যেতে থাকে এবং অবাঞ্ছিত চুল গজানো বেড়ে যায় ও ব্রণের সৃষ্টি হয়।

আঁচিল
ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আঁচিল সহ ঘাড় এবং শরীরের ভাঁজে বেগুনি রঙ্গের প্ল্যাক দেখা যায়। গবেষকদের মতে ত্বকে একান্থোসিস নিগ্রিকান্স (Acanthosis Nigricans) বা অতি  মাত্রায় আঁচিল প্রিডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ।

ত্বকের যত্নে খাবার
ত্বক সুন্দর, সতেজ ও তারুণ্যদীপ্ত রাখতে আপনাকে খেতে হবে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা জটিল শর্করা যুক্ত খাবার যাতে আছে নিম্ন মাত্রার গ্লাইসেমিক সূচক। জটিল শর্করা ভেঙ্গে চিনিতে রূপান্তরিত হয় খুব ধীরে এবং রক্তে চিনি এবং ইন্সুলিন হঠাৎ বেড়ে যায় না।
 

গ্লাইসেমিক সূচক

উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচক

আলু, পটেটো চিপ্স, কোমল পানীয়, ফলের জুস, সাদা ভাত, ক্যান্ডি, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল

নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচক

সেদ্ধ করা মিষ্টি আলু, শাক সবজি, গোটা শস্য

খাবার রান্না
খাবার রান্নার দিকেও নজর দিতে হবে। আলু বা অন্যান্য শ্বেতসার যুক্ত খাবার ভাজি বা গ্রিল করলে গ্লাইসেমিক সূচক বেড়ে যায়। তাই এসব খাবার সেদ্ধ বা স্টিম করে খাওয়া উচিৎ।

ক্রমানুসারে খাওয়া
কোন খাবার আগে এবং কোনটা পরে খাচ্ছেন, সেটাও জানা দরকার। শর্করা খাওয়ার আগে প্রোটিন এবং শাক- সব্জি খেলে খাবার পর ব্লাড সুগার ও ইন্সুলিন বৃদ্ধি কম হয়।

লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক





 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK