সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৭:০৩
ব্রেকিং নিউজ

পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর টুনা মাছ

পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর টুনা মাছ

সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ
 
আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন জাপানিরা অনেকের চেয়ে বেশী স্বাস্থ্যবাণ এবং দীর্ঘজীবি হন। এর কারণ তারা কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খান এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার তেমন খান না। জাপানিদের খাবার তালিকায় রয়েছে প্রচুর টুনা মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। তারা এসব মাছ খায় সুশি হিশেবে অথবা সেদ্ধ বা গ্রিল করে।
 
টুনা বিদেশী মাছ কিন্তু এখন এটা বাঙালীর খাবারের তালিকায় আস্তে আস্তে দিব্যি ঠাই করে নিচ্ছে টুনা মাছ। সুপার শপগুলোতে ক্যানে থাকা টুনা বা ফ্রোজেন টুনা পাওয়া যায়। এই দু’ধরণের টুনাই উপকারি। টুনা মাছ মুড ভাল রাখে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, পেটে অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং চুল ভাল রাখে। 
 
টুনায় আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, সেলেনিয়াম (selenium), এবং ভিটামিন ডি। এখন জেনে
নেয়া যাক টুনার স্বাস্থ উপকারিতা কি কি।
 
১। ত্বকের যত্নে টুনা
টুনা মাছে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং ওমেগা -৩ ফ্যাটি এসিড ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে আর্দ্র (ময়েশ্চারাইজ) করে এবং ত্বককে কোমল রাখে। তাই চকচকে স্বাস্থ্য এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে আপনার খাবার তালিকায় অবশ্যই টুনা রাখুন।
 
২। রোগ প্রতিরোধে টুনা
টুনা ফিশ-এ আছে প্রচুর ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ভিটামিন এ এবং সেলেনিয়াম, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
 
৩। হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টুনা
হাড়কে শক্ত রাখতে এবং হাড় ভাঙ্গা ও ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে টুনায় থাকা ভিটামিন বি বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই ডায়েট চার্টে টুনা রাখুন এবং এর ফলাফল দেখুন।
 
৪। ওজন কমাতে টুনা
অতরিক্ত ওজন বর্তমানে একটি বড় সমস্যা। আমরা মজার খাবার খেতে চাই কিন্তু সাথে চাই স্লিম ফিগার। টুনা পারে আমাদের এ সমস্যা সমাধান করতে। টুনায় থাকা লো ফ্যাট, লো ক্যালিরি এবং প্রোটিন ওজন কমাতে সহায়ক।
 
৫। হৃদপিন্ডের সুরক্ষায় টুনা
টুনায় থাকা ওমেগা-৩ রক্তের ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং কোলেস্টেরল কমায়। ফলে হার্ট যথাযথভাবে কাজ করতে পারে।
 
৬। উচ্চ রক্তচাপ কমায় টুনা
টুনা মাছে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। ওমেগা-৩ এবং পটাশিয়াম যৌথভাবে কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমকে সচল রেখে রক্তচাপ কমায় এবং হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমায়।
 
৭। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় টুনা
টুনায় থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের সাথে যুদ্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত টুনা খেলে তা কিডনি ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
 
৮। শক্তি উৎপাদনে টুনা
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে টুনা। ফলে আমরা অনেক বেশী শক্তিসম্পন্ন ও স্বাস্থ্যবান থাকতে পারে।
 
৯। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে টুনা
টুনা মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বয়সজনিত চোখের রোগ ম্যাকুলার ডিজেনারেশান (macular degeneration) রোধ করে। এই ধরনের অসুখ ডায়াবেটিসের কারণে হয়। টুনা ডায়াবেটিক রেটিনা ক্ষয় থেকে চোখকে রক্ষা করে।
 
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK