সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৯:৪২

দই খেতে ভালবাসে? দইয়ের আসল উপকারিতা পাবেন টক দইয়ে। জানুন কেন

দই খেতে ভালবাসে? দইয়ের আসল উপকারিতা পাবেন টক দইয়ে। জানুন কেন

সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ
 
টক দই একটি পুষ্টিকর খাদ্য এবং এতে আছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। টক দই মিষ্টি দইয়ের তুলনায় বেশী উপকারি কারণ এতে নেই কোন চিনি। এই খাবারটি দুধ দিয়ে বানানো হয় তাই এটি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-২,  ভিটামিন বি-১২, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সহ বেশ কিছু পুষ্টিতে ভরপুর। দইয়ের একটি বিশেষ সুবিধা হল এটা দুধের চেয়ে সহজে হজম হয়।
 
আয়ুর্বেদ চিকিৎসা মতে রাতে দই না খাওয়াটাই ভাল, তবে খেলে এর সাথে সামান্য চিনি ও গোল মরিচ মিশিয়ে খাওয়া উচিৎ। আর দিনে দই খেলে তা চিনি ছাড়া খান। তাহলে এখন দেখা যাক দইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি।
 
১। হজমে সাহায্য করে দই
দই হচ্ছে প্রোবায়োটিক খাদ্য, যার মানে হচ্ছে এতে আছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারি ব্যাক্টেরিয়া। এই খাবারে থাকা ব্যাক্টেরিয়া অন্ত্রের কাজের উন্নয়নে সহায়তা করে। এটা পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
 
২। ত্বকের সৌন্দর্য
দই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে প্রাকৃতিকভাবে শুষ্ক ত্বককে নিরাময় করে। দই ফেসপ্যাকের একটি বিশেষ উপাদান। এতে থাকা ল্যাকটিক এসিড এক ধরনের এক্সফোলিয়েট যা মৃত কোষ এবং দাগ দূর করে।
 
৩। উচ্চ রক্তচাপ হ্রাসে দই
আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের এক গবেষণায় প্রমাণিত যে, যারা চর্বিহীন দই খায় তাদের অন্যদের তুলনায় উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবণা ৩১% কম। দইয়ে থাকা বিশেষ প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখে।
 
৪। হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় দই
হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে দই একটি কার্যকরি খাবার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের মতে ১ কাপ বা ২০০ গ্রাম দইয়ে আহে ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের একটি দৈনিক ডোজ কেবল হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করে না, বরং তা মজবুতও করে।
 
৫। ওজন কমাতে দইয়ের ব্যবহার
দইয়ে আছে খুব কম ফ্যাট এবং প্রচুর ক্যালরি। এ কারণে দই শরীরের বডি ম্যাস ইন্ডেক্স বা বি এম আই (BMI) ঠিক রাখে এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
 
৬। নারীদের যোনি পথের সংক্রমণ (vaginal infection) দূর করে
দইতে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস এসিডোফিলাস (Lactobacillus Acidophilus) ব্যাকটেরিয়া শরীরের সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। এটা হাইড্রোজেন পারক্সাইড উৎপাদন করে ইনফেকশন দূর করে।
 
শেষ কথা
দই যে একটি পুষ্টিকর খাদ্য এতে কোন সন্দেহ নেই। আপনি চাইলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দই যুক্ত করতে পারন। ১ বাটি দই তাজা ফল বা সূর্যমুখী ফুলের বীজের সমান পুষ্টিকর।
 
দইয়ের একটি স্বাস্থ্যকর রেসিপি: আলু, টই দই সালাদ
 
উপকরণঃ
  • আলু, মাঝারি সাইজের (সেদ্ধ করা), পরিমাণমত
  • টক দই ১ কাপ
  • সরিষা ভাজা, পরিমাণমত
  • গোটা জিরা ভাজা, পরিমাণমত
  • লবণ পরিমাণমতো
  • ধনে পাতা, পরিমাণমত
প্রণালীঃ
সেদ্ধ আলু কিউব করে কেটে নিন। এখন একটি পাত্রে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিন। প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
 
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK