রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:৩৩

ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শেষ মুহুর্তে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শেষ মুহুর্তে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের এক দিন আগে প্রচারণা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থিতা তুলে নিয়েছেন দুই প্রার্থী। রাজধানী তেহরানের মেয়র আলিরেজা জাকানি বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানান।
 
এর আগে বুধবার রাতে প্রার্থিতা তুলে নেন আমির হোসেন গাজিজাদেহ হাশেমি (৫৩)। এসময় তিনি অন্যান্য প্রার্থীদেরও সরে যেতে বলেন। যাতে বিপ্লবী দল আরো শক্তিশালী হয়। রাষ্ট্র পরিচালিত ইরনা নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
 
ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালে। কিন্তু গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে শুক্রবার (২৮ জুন) এ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল ছয়জনের। তারা হলেন মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, আমির হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি, সাঈদ জালিলি, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মদি ও আলিরেজা জাকানি। এদের মধ্যে আমির হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি ও আলিরেজা জাকানি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
 
হাশেমি রাইসির অন্যতম উপ রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সে নির্বাচনে তিনি এক মিলিয়নেরও কম ভোট পেয়েছিলেন। হাশেমির প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত রক্ষণশীল শিবিরের একীকরণে খুব বেশি অবদান রাখে না। বরং দুই কট্টরপন্থী হিসেবে বিভক্ত সাবেক পারমাণবিক আলোচক সাঈদ জালিলি ও সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাগের গালিবাফ একই ব্লকের জন্য লড়াই করছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদক জেইনা খোদর এ কথা জানান।
 
তিনি বলেন, প্রত্যাশা ছিল যে একজনের সমর্থনে অন্য জন সরে যাবেন। কিন্তু তা হয়নি। নির্বাচনে রক্ষণশীল গালিবাফ ও জালিলিকে এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ইসলামী রেভ্যুলুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) বিমান বাহিনীর সাবেক কমান্ডার গালিবাফ চার বছর ধরে সংসদের স্পিকার ছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তেহরানের মেয়র ছিলেন। এর আগে পুলিশ প্রধান ছিলেন। তিনি ২০০৫, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তখন তিনি রাইসির সমর্থনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন।
 
দেশটির সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সরাসরি প্রতিনিধি জালিলি। তিনি ২০২১ সালের নির্বাচনে রাইসির পক্ষে প্রত্যাহার করেছিলেন। সে নির্বাচনে রাইসি কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন।
 
একমাত্র সংস্কারবাদী হলেন কার্ডিয়াক সার্জন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি মধ্যপন্থী রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানির প্রাক্তন প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। খোদর উল্লেখ করেছেন, ‘পেজেশকিয়ানের এখনো জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এটি নির্ভর করবে ভোটারদের উপস্থিতির ওপর। কিন্তু আমরা দেখেছি যে আগের নির্বাচনগুলোতে খুব কম ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছে।’
 
অপরদিকে ৬৪ বছর বয়সী মোস্তফা পুরমোহাম্মদি এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা একমাত্র ধর্মীয় নেতা। তিনি ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। কট্টর রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। আবার মধ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমলে বিচারমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বিগত দিনগুলোর চেয়েও সর্বোচ্চ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভোটারদের। সূত্র : আল জাজিরা।
উত্তরণবার্তা/এসএ
 
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK