উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : শুরু হয়েছে ফলের মওসুম। বাজারে এখন আম, লিচু, কাঁঠালসহ নানান ফলের সমারোহ।বৈরী আবহাওয়ার কারণে গ্রীষ্ম শুরুর আগেই হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে পাকা রসালো মজাদার এইসব ফল। তবে তুলনামূলক দামে কম এবং গ্রীষ্ম মৌসুমের অন্যতম পুষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ফল কাঁঠাল। সাধারণত এই ফলটি কম দামে দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলের প্রতিটি হাটে বাজারে প্রায় কম বেশি পাওয়া যায় বলে অনেকে এই ফলটিকে গরিবের ফল বলে থাকে। সাধারণত গ্রামীণ অঞ্চলের প্রতিটি গাছের নিচু থেকে মগডাল পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুলন্ত অবস্থায় রসালো ফল কাঁঠাল দেখা যায়। এই ফলের সুমিষ্ট ঘ্রাণ দিনাজপুরের গ্রামীণ জনপদে বসবাস করা মানুষদের মুগ্ধ করেছে।
জেলার বীরগঞ্জের মোহনপুর, মরিচা ও বীরগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় দেখা যায়, বিভিন্ন বাড়ির আঙিনায়, স্কুল-কলেজ, গ্রামীণ সড়কের ধারে, পুকুর পাড়ে, বাড়ির আনাচে-কানাচে রোপিত গাছে থোকায় থোকায় কাঁঠালে কাঁঠালে ভরে আছে। কোনটি কাঁচা আবার কোনটি পাকা। কাঁঠাল পাকার সুগন্ধি ঘ্রাণে গাছে উঠে অনেকে কাঁঠাল পাড়িয়ে মনের আনন্দে শিশু কিশোর থেকে শুরু করে নানান বয়সের মানুষ দল বেঁধে কাঁঠাল খেয়ে স্বাদ গ্রহণ করছে। তবে এ বছর তীব্র দাবদাহের পরও কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি বড় ছোট মাঝারি গাছে ২০০-৬০০টি পর্যন্ত কাঁঠাল ধরেছে। বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল ফলটি পুষ্টিতে যেমন ভরপুর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। দিনাজপুরের প্রতিটি জনপদেই এই কাঁঠাল পাওয়া যায়।
কাঁঠাল গাছে কাঁঠাল প্রাকৃতিক নিয়মে পাকে। পরিচর্যা এবং কোন কীটনাশক প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে বেশ সুস্বাদু। কাঁঠালের বিচি সবজির সাথে রান্নাসহ পুড়িয়ে বা ভেজে ভর্তা জনপ্রিয় খাবার। কাঁঠালের কোন অংশই পরিত্যক্ত থাকেনা। কাঁঠালের উচ্ছিষ্টাংশ গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
এ ব্যাপারে মোহনপুর ইউপির সমাজসেবক মাকসুদুজ্জামান সাজু বলেন, কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। ফলটি বিষমুক্ত প্রাকৃতিক উপায়ে পেয়ে থাকি। সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা অর্থের অভাবে ফল কিনে খেতে পারে না, তাই তারা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থেকেই বঞ্চিত হয়। অপরদিকে কাঁঠাল এমন একটি ফল যেটা গ্রামাঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, যা আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। তাই সকলকে কম বেশি এই ফলটি খাওয়া উচিত।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, কাঁঠালে অন্যান্য ফলের চেয়ে পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। সাধারণত ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান এই ফল থেকে পাওয়া যায় এবং এই ফলটি খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই বেশি বেশি করে এই ফল খেতে হবে।
উত্তরণবার্তা/এআর