বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৪:২৮
ব্রেকিং নিউজ

যেভাবে ‘মিষ্টি মেয়ে’ হয়ে ওঠেন কবরী

যেভাবে ‘মিষ্টি মেয়ে’ হয়ে ওঠেন কবরী

উত্তরণবার্তা ডেস্ক  : ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে একাধারে তিনি ছিলেন অভিনেত্রী, সংগঠক, নির্মাতা, প্রযোজক ও রাজনীতিক। ২০২১ সালের এই দিনে চিরতরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি। বুধবার ছিল তাঁর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে হারানোর এই দিনে জেনে নেয়া যাক, অভিনেত্রী যেভাবে ‘মিষ্টি মেয়ে’ উপমাটি পেয়েছিলেন—

১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন কবরী। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়।

চট্টগ্রামের সেই সরল-সহজ মেয়েটি নায়িকা হিসেবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন ১৯৬৪ সালে। বয়সটা তখন সবে ১৪ বছর। ছবির নাম ‘সুতরাং’ আর প্রথম নায়ক সুভাষ দত্ত। অথচ এই ছবিতে তাকে এক পর্যায়ে 'গর্ভবতী' হতে হয়। এমনকি এই ছবিতে বাচ্চা হবার দৃশ্যও ছিল। গামছার মধ্যে তুলো ভরে পেটের ওপর লাগিয়ে শাড়ি পরিয়ে তাকে গর্ভবতীর রূপ দেয়া হয়েছিল।

১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কবরী-ফারুক অভিনীত এ ছবিটিকে বাংলা ভাষার অন্যতম রোমান্টিক পিস হিসেবে ধরা হয়। প্রমোদ কর ছদ্মনামে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান। ‘সুজন সখী’ সিনেমা ছাড়িয়ে যায় আগের সব জনপ্রিয়তাকে। কবরী তার ক্যারিয়ারের অন্যরকম উচ্চতায় উঠে যান।

২০০৬ সালে এসে ‘আয়না’ নামের একটি ছবি নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন কবরী। এমনকি ওই ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি অভিনয়ও করেছিলেন। এরপর রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে।

কবরীর বর্ণাঢ্য জীবনকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আরেক গুণী অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক এবং পরিচালক সোহেল রানারও। তিনি বলেন, ‘‘কবরীকে ‘মিষ্টি মেয়ে’ নামটা এ দেশের সাধারণ মানুষেরাই দিয়েছে। সাধারণ লোকের দেয়া নামটাই বোধ হয় একজন শিল্পীর বড় প্রাপ্য। একজন শিল্পী হিসেবে তাঁর বড় সার্থকতা। এরপর শিল্পী হিসেবে তাঁকে নিয়ে আর দ্বিতীয় কথা বলার নেই। সি ওয়াজ জাস্ট আন প্যারালাল। ওই মিষ্টি মুখ বা ওই মিষ্টি হাসি বা ওই মিষ্টি অভিনয়—বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আসেনি এর আগে এক কবরী ছাড়া। আগামী ৫০ বছরে আসবে বলেও আমার ধারণা নেই। আমি বিশ্বাস করি, শত বছরে কবরী একটাই জন্মায়।’’

এদিকে, ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে মুক্তি পায় আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘স্মৃতিটুকু থাক’। এই ছবির মাধ্যমেও দর্শক মনে জায়গা করে নেন অভিনেত্রী। সেলুলয়েড পর্দার বাইরেও ছবিটি অন্যভাবে আলোচিত। কারণ এই নাম ব্যবহার করেই কবরী প্রকাশিত করেন তার আত্মজীবনী। ২০১৭ সালে ‘স্মৃতিটুকু থাক’ নামে মোড়কবন্দি হয় ১৫৬ পৃষ্ঠার বইটি।

অন্যদিকে, প্রায় ১৫ বছর পর ২০২০ সালে কবরী ফের উদ্যোগ নেন চলচ্চিত্র নির্মাণের। নাম ‘এই তুমি সেই তুমি’। এখানেও কবরী তুলে ধরার চেষ্টা করেন নতুন মুখ নিশাত সালওয়াকে। এর শুটিং ছিল প্রায় শেষ পথে। পাশাপাশি চলছিল ডাবিং ও সম্পাদনার কাজ। এতে কবরী নিজেও অভিনয় করেন। তবে ছবিটি পুরোপুরি শেষ করে যেতে পারেননি কবীর। বছর দুয়েক আগে তাঁর ছেলে শাকের চিশতী সিনেমাটির শুটিং পুরো সম্পন্ন করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্ম কবরীর। আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল ও মা লাবণ্য প্রভা পাল।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK