শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০০:৫৩

পাঁচ সিটির নির্বাচন : ভোট সুষ্ঠু করতে ইসির নানা তৎপরতা

পাঁচ সিটির নির্বাচন : ভোট সুষ্ঠু করতে ইসির নানা তৎপরতা

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত এই সিটি ভোটকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর ভোটে সহযোগিতা করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে বিশেষ বিধানের কথা মনে করিয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঐ চিঠিতে ভোটের আগে কমিশনের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্টদের কোনো ছুটি বা বদলি করা যাবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। একইভাবে ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেননা আইন অনুযায়ী ঋণখেলাপিদের প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক এক চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর বিধান অনুসরণ এবং ইসিকে সহযোগিতা দিতেই চিঠি দিয়েছে ইসি।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

ইসি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠিতে জানায়, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার স্থাপনা/অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ইসির চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি ৩ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যে কোনো ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত হলে ঐ ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত দায়িত্ব পালন বা এরূপ সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে।

বিধিমালার বিধি ৮৯ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর এবং ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ দিন সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া বিধি উল্লিখিত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি করা যাবে না। নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে কোনো ব্যক্তি নির্বাচনসংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে নিয়োগের পর নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন। ইসি আরো জানায়, নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে ইসিকে অতীতের ন্যায় সহায়তা দেবেন। নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত যাতে তাদের অন্যত্র বদলি করা বা ছুটি না দেওয়া হয় অথবা নির্বাচনি দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান, সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

ঋণ খেলাপিদের তথ্য দিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে নির্দেশ : আসন্ন খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন ও বিধি অনুসারে ঋণখেলাপি ব্যক্তিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না। তাই চার সিটি নির্বাচনে ঋণখেলাপি ব্যক্তিরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলে যাতে তাদের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা যায়, সে জন্য আইনে নির্ধারিত সব ব্যাংক থেকে ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা আবশ্যক। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বিকাল ৪টার পর মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের নাম, পিতা/মাতা/ স্বামীর নাম ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্বউদ্যোগে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে সংগ্রহ করার জন্য এবং সে আলোকে বিভিন্ন ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন। এই অবস্থায় ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন কিংবা তার আগে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK