শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০১:০৬
ব্রেকিং নিউজ

বিএসএমএমইউয়ে কডিড-১৯ বুস্টার ডোজ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফল প্রকাশ

বিএসএমএমইউয়ে কডিড-১৯ বুস্টার ডোজ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফল প্রকাশ

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কোডিড-১৯ ভ্যাক্সিনের বুস্টার ডোজ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এই নিয়ে পরিচালিত গবেষণা বিষয়ে এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ লিখিত বক্তব্যে একথা বলেন। ‘এন্টিবডি টিটরি সিক্স মান্থস আফটার থার্ড ডোজ অব ভ্যাকসিনেশন অ্যাগেনেষ্ট SARS-CoV-2’ ’ শীর্ষক গবেষণায় জানানো হয়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ৬০ কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে ৬৪ লাখের বেশি মানুষ। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে এবং এই রোগে ২৯ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এতে জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী বুস্টার গ্রহণের ১ মাস পরে শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের দেহেই এন্টিবডি পাওয়া গেছে এবং প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই এন্টিবডির মাত্রা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়ে এন্টিবডির মাত্রা দাঁড়িয়েছে ২০৮৭৮ AU/mL। তবে বুস্টার গ্রহণের ৬ মাস পরেও শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের দেহেই এন্টিবডি পাওয়া যায় কিন্তু প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই এন্টিবডির মাত্রা কমে গড় এন্টিবডির মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১০৬৭৫.৭ AU/ml।এর মধ্যে যাদের কোভিড আক্রান্ত হবার ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রেই এন্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। রক্তের প্যারামিটারগুলোতে (হিমোগ্লোবিন, প্লেটলেটসহ অন্যান্য) উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ কোটি টাকার প্রথম ডোজ এবং ১২ কোটিরও বেশি দ্বিতীয় ডোজ এবং ৪ কোটিরও বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দেশে বুস্টার ডোজসহ ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি চলমান আছে। উপাচার্য বলেন, মানবদেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী করা টিকাদানের উদ্দেশ্য। টিকা গ্রহীতার দেহে এন্টিবডি তৈরি হয় এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত হবার এবং আক্রান্ত হলে রোগের তীব্রতার সম্ভাবনা সাধারণত কমে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। এ গবেষণায় বুস্টার ডোজ গ্রহণের ৬ মাস পর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি এন্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়।গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের ১ মাস পরে পরিচালিত গবেষণায় ২২৩ জনের মাঝে ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। যারা পূর্বেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি এন্টিবডি পাওয়া গিয়েছিল। টিকা গ্রহণের ৬ মাস অতিবাহিত হবার পরে দেখা দিয়েছিল, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এন্টিবডির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০ জন টিকা গ্রহীতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৭৩ শতাংশের এন্টিবডির মাত্রা হ্রাস পেয়ে গড় এন্টিবডির মাত্রা ৬৭৯২ AU/ml থেকে ৩৯৬৩ AU/ml তে নেমে এসেছিল।

এ সময় ২ জন টাকা গ্রহীতার দেহে পর্যাপ্ত এন্টিবডি পাওয়া যায়নি। উপাচার্য বলেন, টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা, কার্যকারিতা এবং সময়ের সাথে এন্টিবডি কমে যাবার প্রমাণ এ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে পাওয়া যায়। যারা বয়স্ক বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী তাদের ক্ষেত্রে এবং সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে পুনরায় ডোজ নেবার প্রয়োজন আছে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে এই ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিধির যথাযথ অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য  (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল প্রমুখ।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK