মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৮:১১
ব্রেকিং নিউজ

এগিয়ে চলা দুই নারী ক্রিকেটার

এগিয়ে চলা দুই নারী ক্রিকেটার

উত্তরণ বার্তা  ক্রীড়া  ডেস্ক  : সালমা খাতুন ও জাহানারা আলম দু’জনেই খুলনার মেয়ে। তারা দু’জনেই বড় বড় স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কাজ করছেন। নারীদের আইপিএলখ্যাত উইম্যান্স টি-২০ চ্যালেঞ্জে খেলবে তিন দল। খেলছেন সারা বিশ্বের নারী ক্রিকেটাররা। কঠিন এ চ্যালেঞ্জে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই নারী ক্রিকেটার সালমা খাতুন ও জাহানারা আলম।

আর্থিক ও সম্মানের দিক দিয়ে তাদের যেমন বড় প্রাপ্তি, তেমনি দুই নারীকে নিয়ে গর্বিত গোটা বাংলাদেশই। মেয়েদের আইপিএল হিসেবে এ আসরকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ভারতীয় বোর্ড। এবার তৃতীয় আসর হবে আগামী ৪ থেকে ৯ নভেম্বর। ছেলেদের আইপিএলের মতো মেয়েদের টুর্নামেন্টও হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

আমার দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই -সালমা খাতুন

কোরবানি ঈদের পর থেকে আমি নিজেকে তৈরি করছি। সত্যি বলতে, আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সুযোগ-সুবিধা বিসিবি দিয়েছে প্রস্তুতির জন্য। মূল মাঠে ও সেন্টার উইকেটে অনুশীলন করেছি, ফ্লাড লাইটে করেছি। এ টুর্নামেন্ট খেলার জন্য নতুন কুকাবুরা বলে অনুশীলনের সুযোগ দিয়েছে আমাকে। বিসিবির কোচ মাহবুব আলি জাকি আমাদের কোচার। এত বড় আসরে সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। আমাকে যেহেতু তারা অলরাউন্ডার হিসেবেই নিয়েছে, ব্যাটে-বলে ভালো পারফর্ম করতে চাই। দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। আমার ও জাহানারার পারফরম্যান্স দেখে যেন সামনে বাংলাদেশ থেকে ওরা আরও নারী ক্রিকেটার নিতে আগ্রহী হয় বললেন সালমা খাতুন।

বাংলাদেশের মেয়েদের ক্রিকেট হাঁটি হাঁটি পা পা করার দিনগুলো থেকেই আছেন সালমা খাতুন। দেশের ক্রিকেটে তার পথচলা এক যুগের বেশি সময় ধরে, এখনও তিনি দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশ মহিলা দলের টি-২০ অধিনায়ক সালমা খাতুন। সালমা জায়গা পেয়েছেন ট্রেইলব্লেজার্স দলে। তার দলের অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা। দলে আছেন ঝুলন গোস্বামীর মতো অভিজ্ঞ তারকা। বিদেশিদের মধ্যে আছেন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন ডেনড্রা ডটিন।

বোল্ড আউটই আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়- জাহানারা আলম

বাংলাদেশ মহিলা দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় জাহানারা আলম। বিশ্বের সুন্দরী ক্রিকেটারদের তালিকায়ও উঠে এসেছে তার নাম। তার মধ্যে মানবিক গুণাবলিও রয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকেই অসহায় মানুষের জন্য কাজ করেছেন। লকডাউন শুরু হলে খুলনায় যেতে পারেননি তিনি। এ জন্য মিরপুরের আশপাশে অসহায় মানুষের জন্য নিজ হাতে খাবার সরবরাহ করেছেন। করোনার মধ্যেও ফিটনেস নিয়ে জাহানারা ছিলেন খুবই সতর্ক। ঘরের সিঁড়িতে দৌড়, মেঝেতে জিম করে ফিটনেস ঠিক রেখেছেন।

গত বছর ভেলোসিটির হয়ে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী পেসার। প্রথমটিতে ৩৪ রানে উইকেটশূন্য থাকলেও পরে ফাইনালে ২১ রানে নেন দুই উইকেট। আগের আসরে দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন জাহানারা। এ নিয়ে এটি তার দ্বিতীয় আসর। আগের দল ভেলোসিটির হয়েই খেলছেন তিনি। জাহানারা স্বপ্ন দেখেন মরুর বুকে গতিময় ডেলিভারিতে। ডিগবাজি খাচ্ছে স্টাম্প আর বাতাসে উড়ছে বেলস।

মাথা নিচু করে আউট হয়ে মাঠ ছাড়ছেন ব্যাটাররা। ছেলেরা ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করতেই জাহানারাও মাঠে নামার জন্য ব্যাকুল হয়ে যান। বিসিবিতে আবেদনের পর মেয়েরাও অনুশীলনের সুযোগ পান। এভাবে কিছুদিন অনুশীলনের পরই আসে সুখবর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) তাদের প্রস্তুত করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেন। ফিটনেস ও দক্ষতা ঠিক রাখার জন্য দু’জন কোচও তাদের সঙ্গে দিয়ে দেয় বিসিবি।

গত বছর ভেলোসিটি শেষ পর্যন্ত ফাইনালে জিততে পারেনি। তবে জাহানারার দুটি বোল্ডের ভিডিও তুমুল সাড়া ফেলেছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এ প্রসঙ্গে জাহানারা বলেন, ভিডিও বেশি না দেখলেও আমার হৃদয়জুড়ে সবচেয়ে বেশি থাকে অমন আউট। ব্যাটারকে ফাঁকি দিয়ে বেলস উড়িয়ে দেয়াই আমার ক্রিকেট জীবনের অক্সিজেন। বোল্ড আউটই ক্রিকেটে আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়। এরপর ভালো লাগে ব্যাটারকে বিভ্রান্ত করে কট বিহাইন্ড করতে, তৃতীয় প্রিয় এলবিডব্লিউ। তবে বোল্ড আউটের মতো মজা ক্রিকেটে আর কিছুতে পাই না। উইমেনস টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের গত আসরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটির কারণেই এবার আরও বেশি তাড়না অনুভব করছি। বড় মঞ্চে নিজেকে যাচাই করার সুযোগ, বৈশ্বিক আবহে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই।

এ টুর্নামেন্টকে আমার বিশ্বকাপের মতোই বড় মঞ্চ মনে হয়। বিশ্বকাপে অবশ্যই অনেক বেশি দল থাকে। তবে এখানে এক দলেই বিশ্বের কয়েকটি দেশের ক্রিকেটার থাকে। তাদের সঙ্গে থাকা, অনুশীলন করা, মাঠের ভেতরে-বাইরে দ্রুত মানিয়ে নেয়া, বড় তারকাদের মধ্যে পারফর্ম করা, বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে পারফর্ম করার চাপ, এসব অনেক বড় ব্যাপার। গতবার ওখানে গিয়ে আরও ভালো করে বুঝেছি, আমরা কতটা পিছিয়ে আছি। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা ছিলেন, এমনকি ভারতের ক্রিকেটাররাও সবাই অনেক পেশাদার। আয়োজনের দিক থেকে, ক্রিকেটের মানে, সব কিছুতেই অনেক পেশাদারিত্ব। ওই লেভেল থেকে অনেক পিছিয়ে আমরা। আরও অনেক উন্নতি করতে হবে আমাদের।

উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK