উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : শীতের শুরুতেই হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকা, চা বাগান ও হাওর এলাকায় পরিযায়ী পাখি শিকার শুরু করেছে অসাধু শিকারিরা। বেশ কয়েকটি চক্র প্রাকৃতি সৌন্দর্যমণ্ডিত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখি ও দেশি প্রজাতির পাখি শিকারে নেমেছে।
ইতোমধ্যে বনবিভাগ চা বাগান এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে দেড় শতাধিক পাখি উদ্ধার করে এবং শিকারের দায়ে ৭ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ৪ শিকারিকে ভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
চুনারুঘাট উপজেলার ২৪টি চা বাগান ও ১৮ হাজার হেক্টর বনভূমি ছাড়াও নিচু এলাকার জমিতে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। চা বাগান ও পাহাড়ি এলাকায় অসংখ্য লেক ও জলাধার রয়েছে। রয়েছে বিল ও হাওর এলাকা। প্রতি বছর শীতের শুরুতেই এসব এলাকায় পৃথিবীর বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে অতিথি পাখিরা আসে। এবারো শীতের শুরুতেই অতিথি পাখিরা আসছে।
এ সুযোগে এক শ্রেণীর পেশাদার ও সৌখিন শিকারিরা নানা ফাঁদ পেতে পাখি শিকার শুরু করেছে। বিশেষ করে চা বাগান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্য, পরীবিল, চা বাগানগুলোর লেক ও বিভিন্ন জলাধারে তারা পোকামাকড় দিয়ে ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করছে।
গত এক সপ্তাহে সাতছড়ি বন বিভাগের কর্মকর্তারা শিকারিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। বড় দুটি অভিযানে তারা শালিক, কাঠঠোঁকরা, বুলবুল, দোয়েল এবং ভিমরাজসহ ১৫২টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জবাই করা অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ সময় তারা উপজেলার বালিয়ারী গ্রামের আ. হেকিমের ছেলে রুকু মিয়া (৪৮), একই গ্রামের আনোয়ার আলীর ছেলে কাইয়ুম (৪৬), একই গ্রামের আ. হান্নানের ছেলে আল আমিন (২৬) ও ঝুড়িয়া গ্রামের ছিদ্দিক আলীসহ ৭ শিকারিকে আটক করে। তার মধ্যে ৩ জনকে ৩ মাস করে এবং একজনকে একমাস কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া ৩ অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিকারিকে স্থানীয়দের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
তারপরও থামছে না পাখি শিকার। বুধবার সকালে সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে বনকর্মীরা বেশ কয়েকজন শিকারিকে ধাওয়া করেছিল। তারা পালিয়ে যায়।
চুনারুঘাট ইউএনও সত্যজিত রায় দাস বলেন- শীতের মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ী পাখিরা আসছে। তাদের নিরাপদ আবাস দিতে হবে। কোনোভাবেই এদের শিকার কিংবা ধরা যাবে না। পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকতে হবে।
সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন, পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা সজাগ আছি এবং অভিযান পরিচালনা করছি।
উত্তরণ বার্তা/এআর