সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:৩০
ব্রেকিং নিউজ

কানাডার করোনা ভ্যাকসিন দ্রুত গতিশীল হবে : জাস্টিন ট্রুডো

কানাডার করোনা ভ্যাকসিন দ্রুত গতিশীল হবে : জাস্টিন ট্রুডো

উত্তরণ বার্তা ডেস্ক : কানাডায় করোনা ভ্যাকসিন প্রদান তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতেই চলছে। তাই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলছেন, কানাডার করোনা ভ্যাকসিন প্রদান আরও দ্রুত গতিশীল করা হবে। এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকের ৫ লাখ ডোজের প্রথম চালান গত সপ্তাহে কানাডায় পৌঁছেছে। তবে কারা এটি পাবেন সে নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তৃতীয় ভ্যাকসিন হিসেবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে হেলথ কানাডা। তবে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন ৬৫ বছর ও তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ না করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ব্যাপারে কমিটি বলছে, বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কতোটা কার্যকর সে সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে। তাই ভ্যাকসিনটির গ্রহীতা হিসেবে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

দ্যা বেঙ্গলী টাইমস থেকে জানা যায়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার পাশাপাশি ফাইজারের কাছ থেকেও এ সপ্তাহে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা রয়েছে কানাডার। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদনের মধ্য দিয়ে কানাডার ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি গতিশীল হবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন চলে আসায় সেপ্টেম্বরের শেষ আগ্রহী সব কানাডিয়ানকে ভ্যাকসিন দিতে সমস্যা হবে না। আগের প্রত্যাশা অনুযায়ী মাস শেষে কানাডা ৬০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন পাবে।

হেলথ কানাডা ও ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন উভয়েই জোর দিয়ে বলেছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও পরবর্তীতে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী যেসব মানুষের ওপর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের মধ্যে গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

হেলথ কানাডার চিফ মেডিক্যাল অ্যাডভাইজার ডা. সুপ্রিয়া আনান্দ বলেন, হেলথ কানাডা ও কমিটির বক্তব্যের মধ্যে কোনো পরস্পর বিরোধিতা নেই। উভয়েই বলছে, সম্ভব হলে ফাইজার বা মডার্নার ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া ভালো। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ফাইজার বা মডার্নার ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকার দরকার নেই। বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা বলছে, কোভিড-১৯ এর কারণে গুরুতর অসুস্থতা, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু ঠেকাতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কার্যকর।

অন্টারিওতে অনলাইন ভ্যাকসিন বুকিং সিস্টেম ও কল সেন্টার ১৫ মার্চ চালু হচ্ছ। সে সময়ই ৮০ বছর ও তার বেশি বয়সী নাগরিকরা ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এই বয়স শ্রেণির সাধারণ কানাডিয়ানদের ভ্যাকসিন পেতে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই বয়সী ৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে অন্টারিওর কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের প্রধান জেনারেল (অব.) রিক হিলার জানিয়েছেন, ৮০ বছর ও তার বেশি বয়সী সাধারণ নাগরিকদের আগামী মাস থেকেই প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। এই বয়সী ৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। ভ্যাকসিন নিতে নাগরিকদের কোথায় যেতে হবে, প্রদেশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তা সুনির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে বলে জানান রিক হিলার। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনেশন সেন্টারের অবস্থান সম্পর্কে জনগণ জানতে চান এবং আমরা সেটি অবগত আছি। তবে বিপুল সংখ্যক ভ্যাকসিনেশন সেন্টারের সবগুলো এ মুহূর্তে চালু নেই।

আগামী কয়েক সপ্তাহে স্বাস্থ্যকর্মী, লং-টার্ম কেয়ার হোমের কর্মী, অত্যাবশ্যকীয় সেবাদানকারী এবং রিটায়ারমেন্ট হোমের বাসিন্দা ও কর্মীদের প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন প্রদান সম্পন্ন করার দিকে মনোযোগ দেবে অন্টারিও। তবে প্রদেশের সব লং-টার্ম কেয়ার ও রিটায়ারমেন্ট হোমের বাসিন্দাদের প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রিক হিলার বলেন, ৭৫ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ ১৫ এপ্রিল শুরু করতে পারব বলে আশা করছি। এর এক মাস পর ভ্যাকসিন পাবেন ৭০ বছরের বেশি বয়সীরা। আর ৬৫ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া ১ জুন শুরু করা সম্ভব হবে। এছাড়া ১ জুলাই থেকে শুরু হবে ৬০ বছর ও তার বেশি বয়সী নাগরিকদের ভ্যাকসিন প্রদান। সরবরাহ ভালো থাকলে অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে বলেও জানায় রিক হিলার।

তবে অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের তালিকায় কারা থাকবেন, সেটি এখনও খোলাসা করেনি অন্টারিও। এছাড়া বাকি নাগরিকদের ভ্যাকসিন প্রদান কোন প্রক্রিয়ায় হবে সেটি সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান রিক হিলার। গ্রীষ্মে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আলবার্টা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ও প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডসহ অনেক প্রদেশ অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ভ্যাকসিনেশনের পরিকল্পনা করছে। সম্মুখসারির কম বয়সী অত্যাবশ্যকীয় কর্মী ও কারাগারের মতো উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ভাবছে তারা।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ