মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৬:০২
ব্রেকিং নিউজ

করোনায় শহীদ চিকিৎসকদের স্মরণ

করোনায় শহীদ চিকিৎসকদের স্মরণ

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : আজ আমাদের জন্য চরম বেদনা ও শোকের দিন। কারণ আমাদের মঞ্চের সামনে করোনায় শহীদ চিকিৎসকদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত আছেন। শহীদদের প্রতি অন্তহীন শ্রদ্ধা-ভালোবাসা এবং পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। আজ শঙ্কা আর আতঙ্কের দিনও। কেননা, করোনাযুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। বরং গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ বাড়ছে। তাই আমাদের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। ১২ মার্চ শুক্রবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে  কভিড-১৯ আক্রান্ত শহীদ চিকিৎসকদের স্মরণসভা এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর এবং চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইয়াং সোশ্যাল অ্যাক্টিভিজম বোর্ড- ওয়াইস্যাবের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির। জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান।

ইয়াং সোশ্যাল অ্যাক্টিভিজম বোর্ড-ওয়াইস্যাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট ডা. হামিদ হোছাইন আজাদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান,  চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. এহসানুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিড-১৯ টেস্টিং ল্যাবরোটরির ইনচার্জ ড. মোহাম্মদ আল ফোরকান, বিআইটিআইডির সহযোগী অধ্যাপক ও ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ, চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, ইউএসটিসির মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ, শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম ও আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন প্রমুখ।  

সভায় শহীদ চিকিৎসকদের মধ্যে ১০ পরিবারের স্বজনের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। এ ছাড়া করোনাকালে বিশেষ অবদান রাখায় ২২ ব্যাক্তি ও সংগঠনকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব, বিআইটিআইডি ল্যাব এবং সিভাসু ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষায় কর্মরত, করোনার রিপোর্ট প্রদানে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দায়িত্বপালনকারী এবং করোনাকালে নানাভাবে অবদান রেখেছেন এমন ১৫৫ জন ব্যাক্তি ও সংগঠনকে সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়।  

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শুভাশীষ তালুকদার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. নুরুল হায়দা শামীম, চমেক হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ডা. শুভ দাশ, রেলওয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আনিসুল হক খান।  

ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, করোনাকালে আমরা একটা যুদ্ধ পার করেছি। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সমাজের জনহিতৈষী ব্যক্তিসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা এ যুদ্ধ করেছি। তবে এখনও সে যুদ্ধ চলছে। তাই আপনাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করুন। কোনো অবস্থাতেই মুখ থেকে মাস্ক খুলবেন না। কথা বলার সময়, বাসায় অবস্থানের সময়সহ প্রতিটি মুহূর্তে মাস্ক ব্যবহার করুন।

তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা বিশেষ একটি সময় পার করেছি। সীমিত জনবল, চিকিৎসা উপকরণ এবং অতি অল্প সময় নিয়ে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হতো। কেবল সিদ্ধান্ত নেয়া নয়, তা বাস্তবায়নও করতে হতো। একটি নোটিশের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চিকিৎসক বদলি করা হতো। প্রতিটি কাজই করতে হয়েছে খুবই দ্রুত এবং পরিকল্পিতভাবে।

সিভিল সার্জন বলেন, করোনায় শহীদ চিকিৎকদের পরিবারকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। এটি তাঁদের ত্যাগের বিপরীতে কিছুই না। তাঁরা আমাদের জন্য, জাতির জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন, তার বিনিময় দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমাদের দায়িত্ব তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা। আজকে আমরা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সে কাজটুকু করার চেষ্টা করেছি। এর মাধ্যমে আমরাই সম্মানিত হব।  

বিআইটিআইডি’র সহযোগী অধ্যাপক ও ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, আমি মনে করি করোনাকালটি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের জন্য একটি যুদ্ধ। গত এক বছর ধরে আমরা সেই যুদ্ধ করে আসছি। এখনও চলমান আছে। এ যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের মাঠে থাকতে হবে।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK