শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০১:২১

হিট অ্যালার্টে করণীয় কী, চিকিৎসকদের পরামর্শ

হিট অ্যালার্টে করণীয় কী, চিকিৎসকদের পরামর্শ

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের শঙ্কা। সেক্ষেত্রে শিশু, বয়স্ক আর প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বেশি করে পানি পানের পাশাপাশি যাপিত জীবনেও কিছু পরিবর্তনের পরামর্শ তাদের। শহর, নগর ও বন্দর -- দাবদাহে যেনো সবখানেই প্রাণ ওষ্ঠাগত। এ অবস্থায় আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে আরও ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
 
বলা হয়, নাতিশীতষ্ণ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৭ অতিক্রম করলেই তা ঝুঁকিতে ফেলে সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠি আর বাইরে কাজ করা মনুষ থাকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে। অথচ কদিন ধরেই তাপমাত্রার পারদ উঠানামা করছে ৩৮ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
 
এরই মধ্যে হিট স্ট্রোকে গাজীপুর, ঝালকাঠি, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গায় মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি তাপপ্রবাহে ঝুঁকিপূর্ণ সময় দুপুর ১২টা থেকে ৩টা। এ সময়টাতে তাপমাত্রার পারদ উঠতে থাকে।
 
চিকিৎসকদের মতে, সবচে বেশি অনিরাপদ শিশু ও বয়স্ক জনগোষ্ঠি। এছাড়া যাদের ওবেসিটি আছে, যারা মানসিকভাবে পিছিয়ে (নিজেদের সমস্যার কথা খুলে বলতে পারেন না), আর যারা নিয়মিত মদ পান করেন তাদের বেলায় থাকতে হবে সতর্ক। প্রচুর ঘাম হলে, শরীর নিস্তেজ হয়ে গেলে, জ্ঞান হারালে, কিংবা হঠাৎ রক্তচাপ কমে আসলে বুঝতে হবে হিট স্ট্রোকের লক্ষণ। এক্ষেত্রে তাদেরকে মেনে চলতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

 হিট অ্যালার্ট থেকে বাঁচতে চিকিৎসকদের পরামর্শ, প্রচুর পানি পান করতে হবে। যতটা সম্ভব বাইরে বের হওয়া যাবে না। গাছ কিংবা শেডের নিচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। খোলা আকাশের নিচে থাকলে হ্যাট ও ঢিলেঢালা সুতি কাপড় পরতে হবে। প্রস্রাবের রঙ হলুদ হলে আরও বেশি পানি পান করতে হবে। সম্ভব হলে পানি দিয়ে বারবার শরীর মুছতে হবে। প্রয়োজনে কাজের সময় পরিবর্তন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিশ্রমের কাজ বিকেলে করাই ভালো বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
 
আইসিডিডিআর,বির পরামর্শক ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মধ্যে অনেক ঘাম হবে, পানিশূন্যতাও হবে, প্রচণ্ড দুর্বলতা থাকবে, আর জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
 
তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে বাইরে না যেতে। তবে সবচেয়ে পিক হিট থাকে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা। কায়িক পরিশ্রমের কাজগুলো সন্ধ্যা বা রাতে করার চেষ্টা করলে তুলনামূলক ভালো হবে। যখন রোদের তাপ বেশি থাকবে, তখন পারতপক্ষে বাইরে বের হওয়া উচিত হবে না। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। সহজ পাত্রে খাবার খেতে হবে। ছোট বাচ্চারা পর্যাপ্ত দুধ খাবে, আর বড়রা বেশি করে পানি পান করবে।

এরই মধ্যে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কর্তৃপক্ষ বলছে, হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে মেডিকেল কলেজ থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক সব জায়গায় দেয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। জনসচেতনতায় নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।
 
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, প্রতিটি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইন, প্রাথমিক পরিচর্যা, হিট স্ট্রোক হলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চলতি বছর বিশ্বের সব চেয়ে উষ্ণতম বছর হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK