উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল ওয়াংচুক। মঙ্গলবার সকালে বার্ন ইনস্টিটিউট পৌঁছলে তাকে সেখানে অভ্যর্থনা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি রাজাকে হাসপাতাল ঘুরিয়ে দেখান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ এবং প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডসহ হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতীম দেশ ভুটানের রাজা।
বার্ন ইনস্টিটিউটে ভুটানের এক নারী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই নারীর চিকিৎসার অগ্রগতি দেখে রাজা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বলে সাংবাদিকদের জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ভুটানের রাজা ঘুরে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আবার বাংলাদেশে এলে হাসপাতালে আসবেন।
সোমবার সকালে চারদিনে রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জিগমে খেসার। সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রানি জেৎসুন পেমা, রাজ পরিবার ও মন্ত্রীসভার সদস্যরা এবং ভুটানের সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ওইদিন বিকেলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন জিগমে খেসার। এরপর দুদেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা সই ও একটি চুক্তি নবায়ন করা হয়। সই করা সমঝোতার মধ্যে রয়েছে- থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করবে বাংলাদেশ।
এছাড়া বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করবে দুই দেশ। ভুটানে বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার বিষয় উল্লেখ করে সামন্ত লাল সেন বলেন, ভুটানে একটি বার্ন ইনস্টিটিউট বানাবে বাংলাদেশ। একে দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।এছাড়া ভুটানের চিকিৎসকদের বাংলাদেশ বার্ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সোমবার সকালে ড্রুক এয়ার বা রয়েল ভুটান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন রাজা। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাজাকে দেয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল ভুটানের রাজাকে গার্ড অব অনার দেন। এ সময় গার্ড পরিদর্শন করেন তিনি।
গত জানুয়ারির নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর কোনো রাষ্ট্র প্রধানের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
ঢাকায় পৌঁছেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভুটানের রাজা।
মঙ্গলবার ভোরে মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন জিগমে খেসার। বিকেলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং বঙ্গভবনে তার সৌজন্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দেয়া রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
বুধবার পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন ভুটানের রাজা। সেখান থেকে যাবেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল দেখতে। জিগমে খেসার বৃহস্পতিবার সকালে যাবেন কুড়িগ্রামে। সেখানকার বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শন করবেন। ওইদিনই সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে চারদিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ভুটান যাবেন।
উত্তরণবার্তা/এআর