রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৯:২৩
ব্রেকিং নিউজ
বর্তমান কৃষকবান্ধব আওয়ামী সরকারের

এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ উত্তম কৃষি চর্চা

এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ উত্তম কৃষি চর্চা

ড. রাজিয়া সুলতানা : স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন- ‘আমার জীবনের একমাত্র কামনা, বাংলাদেশের মানুষ যেনো তাদের খাদ্য পায়, আশ্রয় পায় এবং উন্নত জীবনের অধিকারী হয়।’
 
বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশে কৃষি ক্রমেই খোরপোষ কৃষি (Subsistance Agriculture) থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। কৃষির এ অবস্থাকে ধরে রাখতে হবে। টেকসই করতে হবে। বজায় রাখতে হবে পণ্যের গুণগত মান। কারণ বাণিজ্যিক কৃষির পূর্বশর্তই হলো পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করা। যা নিশ্চিত করতে পারে ‘গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস’ বা ‘উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ)’।
 
কৃষি আবাদ-চর্চায় পৃথিবী এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। সেই বিবেচনা সামনে চলে এসেছে। সেখানে উঠে এসেছে উত্তম কৃষি চর্চার বিষয়টি। উত্তম কৃষি চর্চার ক্ষেত্রে শতভাগ একগুচ্ছ নীতিমালা মানা হয়। জমি-বীজ-পণ্য উৎপাদন হতে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে পর্যায়ক্রমিকভাবে পদ্ধতি মানা হয়। যা সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে মেগা প্রকল্প। নাম ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার‌্যাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ, অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’। ‘গ্যাপ’ বাস্তবায়নের ফলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য হবে মানসম্পন্ন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ। পরিবেশ থাকবে সুরক্ষিত। বৃদ্ধি পাবে রপ্তানি। উন্নতি ঘটবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার।
 
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ। বছরব্যাপী উৎপন্ন হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাক-সবজিসহ নানারকম ফসল। দেশের চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত হচ্ছে। বলাবাহুল্য বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে। কিন্তু পরিমাণের দিক থেকে খুব বেশি নয়। এক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা পণ্যের গুণগত মানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা। পাশাপাশি রয়েছে উৎপাদন এবং সরবরাহের সাথে অসামঞ্জস্যতা। স্থানীয় বাজারেও কৃষকরা পাচ্ছেন না উপযুক্ত দাম। রয়েছে তৃণমূল চাষিদের বাম্পার ফলনের পর উপযুক্ত দাম না পাওয়ার হতাশার বিষয়; কিংবা পণ্য বিপণনে মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠীর দৈারাত্ম্য ও পুরোনো গল্প। সেখানে ‘গ্যাপ’ই হবে সেরা বিকল্প।
 
গ্যাপের অংশীজন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এটি একটি যৌথ প্রচেষ্টা। যাদের কাজের সম্মিলন ঘটাচ্ছে ‘পার্টনার প্রকল্প’, যা কৃষি সেক্টরের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। যাত্রা শুরু ২০২৩ সালের জুলাই মাসে। প্রাথমিকভাবে মেয়াদকাল ২০২৮ সালের ডিসেম্বর। প্রকল্প বাস্তবায়নে রয়েছে ৭টি প্রতিষ্ঠান। প্রধান ভূমিকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে- কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এসবই কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত। এছাড়াও ‘গ্যাপ’ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে এদের সাথে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছে আরও ৮টি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো- বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশন।
 
১৯৯৭ সালে ইউরোপের সুপার শপ এবং প্রধান সরবরাহকারীদের উদ্যোগে সর্বপ্রথম ইউরেপ গ্যাপ (Eurep GAP) নামে উত্তম কৃষি চর্চা কার্যক্রম শুরু করে, যা ২০০৭ সালে ‘গ্লোবাল গ্যাপ’ নামকরণ করা হয়। উদ্দেশ্য কৃষিপণের সঠিকমান নিয়ন্ত্রণসহ পরিবেশ এবং কৃষি শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত রাখা। ২০০৬ সালে আসিয়ান সচিবালয় কর্তৃক সদস্য দেশসমূহে আসিয়ান গ্যাপের যাত্রা শুরু। ২০১৩-১৪ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সার্কভুক্ত দেশসমূহে উদ্যান ফসলের ক্ষেত্রে গ্যাপ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সার্কভুক্ত ৪টি দেশ যথা- বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ এবং নেপালে উত্তম কৃষিচর্চা স্কিম শুরু করে, যা ক্রমেই বিপুলভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশভেদে ‘গ্যাপ’ বাস্তবায়নে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা। এর ব্যত্যয় ঘটেনি বাংলাদেশেও। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ প্রণয়ন করে ‘বাংলাদেশ উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা-২০২০’। যার বাস্তবায়নের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে ‘পার্টনার’ প্রকল্পের মাধ্যমে।
 
‘গ্যাপ’ হলো একটি সমন্বিত কৃষি কার্যক্রম। যেগুলো অনুসরণে নিরাপদ এবং মানসম্পন্ন খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত কৃষিজাত পণ্য সহজলভ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সামাজিক সুরক্ষা সুসংহত হবে। ‘গ্যাপ’ এমন পদ্ধতিসমূহের চর্চা যেগুলো খামারে প্রয়োগ করার ফলে উৎপাদন, সংগ্রহ এবং সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন খাদ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এটি একগুচ্ছ নীতিমালা ও প্রযুক্তিগত সুপারিশমালা, যা সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবহণের বিভিন্ন স্তরে প্রয়োগ করা হয়। সামগ্রিকভাবে আমরা বলতে পারি, ‘গ্যাপ’- ‘মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ, পণ্যের মান উন্নয়ন ও কাজের পরিবেশ উন্নত করে।’
 
বাংলাদেশে ২৪৬টি অনুশীলন চর্চার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে ‘গ্যাপ’। বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ৫টি মডিউল- সাধারণ প্রয়োজনীয়তা মডিউল, নিরাপদ খাদ্য মডিউল, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা মডিউল, কর্মীর স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কল্যাণ মডিউল, পণ্যমান মডিউল এবং সাধারণ প্রয়োজনীয়তা মডিউলের মাধ্যমে। এই মডিউলগুলোর মাধ্যমে নিশ্চিত হবে উচ্চ ফলনশীল, আধুনিক এবং হাইব্রিড জাতের উন্নত মানসম্পন্ন বীজ। প্রয়োজনীয় পরিমাণে সার ও বালাইনাশক। নিরাপদ পানির সাহায্যে সেচ। পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা। অর্থাৎ ফসল সংগ্রহ, সংগ্রহোত্তর সংরক্ষণ এবং পরিবহণ ব্যবস্থাপনার সকল স্তরেই কৃষিপণ্যকে রাখা হবে নিরাপদ, রক্ষা করা হবে খাদ্যমান। তাছাড়া মাটি, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশকে সুরক্ষা করা হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখা হবে কর্ষণ যন্ত্র, সার ও বালাইনাশক প্রয়োগ যন্ত্রপাতি, কর্মীর পোশাক এবং প্যাকেজিং হাউজকে। নজরদারি থাকবে কৃষক ও শ্রমিকের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে। উপকরণ, উৎপাদন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণের সকল পর্যায়ে যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ করা হবে। ‘গ্যাপ’ মানদণ্ডের আলোকে গ্যাপ সার্টিফিকেট প্রদান ও উৎপাদিত পণ্যে গ্যাপ লোগো ব্যবহার করা হবে। সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা সর্বদা চলমান আছে এবং থাকবে। উৎপাদিত গুণগত মানসম্পন্ন কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ ও বাজার নিশ্চিত করা হবে। এমনকি উৎপাদনের আগে কৃষককে পণ্যের দাম ও বাজার নিশ্চিত করা হবে। পরিদর্শক, নিরীক্ষক এবং টেকনিক্যাল পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের আলোকে ‘গ্যাপ’-এর প্রসার ও ব্যবহারে সর্বদা উদ্বুদ্ধকরণ করা হবে।
 
অধিক জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ। তাছাড়া ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা। বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। চাষের জমি নির্দিষ্ট; বরং ক্রমহ্রাসমান। খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য শস্যের ফলন বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাই চাষাবাদে ব্যবহার করা হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বীজ। তবে এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মাটি এবং ফসলের গুণগত মান রক্ষায় অধিকমাত্রায় রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক এবং উচ্চমাত্রার বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত চাষাবাদের ফলে ফসলে পাওয়া যাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত অবশিষ্টাংশ বা আর্সেনিকের মতো ক্ষতিকর ভারী ধাতু। ফসল সংক্রমিত হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর অনুজীব এবং পোকামাকড়ের দ্বারা। ফলে খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হিতকর না হয়ে হচ্ছে ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের ফলে প্রতিবছর বিশ্বে ১০ জনের মধ্যে একজন অসুস্থ হয় এবং প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার লোক মারা যায়। সুস্থ জীবনের জন্য নিরাপদ খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র খাদ্যকে নিরাপদ রাখতে পারে খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত গ্যাপ-এর প্রয়োগ।
 
মানব স্বাস্থ্য তো বটেই, পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিবেচনায়ও নিরাপদ খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য রপ্তানি করতে হলে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ডের পণ্য উৎপাদন করতে হবে। এ মানদণ্ডের পণ্য উৎপাদিত না হওয়ার ফলেই বাংলাদেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকার পরেও খুব সামান্য পরিমাণে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আমরা যদি ‘গ্যাপ’ মানদণ্ডে ফসল উৎপাদন করতে পারি, তাহলে ইউরোপিয়ান দেশসহ বিশ্বের যে কোনো দেশে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আর কোনো বাধা থাকবে না। কৃষি হবে লাভজনক পেশা। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। নতুন আর অভিজ্ঞ কৃষক মিলে বাংলাদেশ কৃষির মাধ্যমে বিশ্বে পৌঁছে যাবে এক অন্যন্য উচ্চতায়।
 
‘গ্যাপ’ বাস্তবায়ন করতে হলে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে উৎপাদক, সম্প্রসারণবিদ, কৃষি গবেষক, সম্প্রসারণ ও বিপণন কর্মীসহ বাংলাদেশ গ্যাপ উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ধারাবাহিকভাবে চলছে প্রশিক্ষণের কাজ। প্রথমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে সম্প্রসারণ কর্মীদের। এরপর পর্যাক্রমে আসবে কন্ট্রাক্ট ফার্মার, উদ্যোক্তা কৃষক, যারা বড় ফার্ম এবং রপ্তানিমুখী ফসল নিয়ে কাজ করে। এরপর প্রশিক্ষণের আওতায় আসবে মাঠপর্যায়ের কৃষকরা।
 
বাংলাদেশে ‘পার্টনার’ প্রকল্প প্রথমে ১৫টি উদ্যান ফসলকে বেছে নিয়েছে ‘গ্যাপ’ বাস্তবায়নের জন্য। ফসলগুলো হলো- ধুন্দল, পটল, লাউ, করল্লা, বেগুন, আলু, বরবটি, কচুর লতি, কাঁচা মরিচ, কাঁচা পেঁপে, আম, পেয়ারা, কাঁঠাল, আনারস, জারা লেবু। এসব ফসলকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো- এদের পোস্ট হার্ভেস্ট লংজিবিটি বেশি। তাছাড়া চাষ করা যায় নির্দিষ্ট খামারে। যেখানে বাস্তবায়ন করা যাবে ‘গ্যাপ’-এর সকল নীতিমালা। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, একজন কৃষককে ‘গ্যাপ’-এর আওতায় কাজ করতে হলে সকল কাজের শুরু ও শেষে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। যা সব সময় সকল মাঠ ফসলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিপেক্ষিতে সম্ভব নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে তা সম্ভব হবে কমিউনিটি বাথরুম এবং হাত ধোয়ার জায়গা স্থাপনের মাধ্যমে।
 
‘গ্যাপ’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করলে যে আমরা ফসল রপ্তানি করতে পারব, তা নয়। গার্মেন্ট শিল্পের মতো বায়ার খুঁজতে হবে। ‘গ্যাপ’-এর সফলতা নির্ভর করবে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ফসল রপ্তানি করতে পারলে। বিশাল মার্কেট। প্রচুর পরিমাণে পণ্য লাগবে। একবার মার্কেট ধরতে পারলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তাই যতদিন না নিরাপদ, পুষ্টি মানসম্পন্ন ফসলের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করা যাবে ততদিন বাইরের মার্কেট ধরা যাবে না। তাই প্রথমে ‘গ্যাপ’ সার্টিফাইড পণ্য বাজারজাত করতে হবে স্থানীয় সুপার শপে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পর মানসম্পন্ন পণ্যের উৎপাদন যখন স্থির বা ক্রমবর্ধমান থাকবে তখন আমাদের যেতে হবে রপ্তানির দিকে। তা না হলে আমরা রপ্তানি বাজার হারাব।
 
বাংলাদেশ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য কন্যা কৃষকরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কৃষির বিভিন্ন সেক্টরে সময়োচিত নীতি, কৌশল এবং কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। যেমন- বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে তেমনই একটি উদ্যোগ ‘এক ইঞ্চি জমিও যেনো অনাবাদি না থাকে।’ এভাবেই কৃষিতে অর্জিত হয়েছে অভূতপূর্ব সাফল্য। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে এক উন্নত আসনে অধিষ্ঠিত করতে ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ বা ‘গ্যাপ’ হতে পারে বর্তমান কৃষকবান্ধব আওয়ামী সরকারের এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।
উত্তরণবার্তা/আসো

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ