বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৪:৩১

নির্বাচনে কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের থাবা : সিইসি

নির্বাচনে কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের থাবা : সিইসি

উত্তরণবার্তা  প্রতিবেদক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘বাইরের থাবা এসেছে’ মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, অর্থনীতি, ভবিষ্যৎ, পোশাক শিল্পসহ সব কিছু রক্ষা করতে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ৩০০ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা দিয়ে গঠিত নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সিইসি এ কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে আরেকটি দুর্ভাগ্যজনক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আমাদের নির্বাচনে বাহির থেকেও থাবা, হাত এসে পড়েছে। তারা থাবা বিস্তার করে রেখেছে। কিছু বিদেশি রাষ্ট্র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ওপর তাদের থাবা বাড়াচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, পোশাক শিল্পসহ অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে এই নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল করতে হবে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিইসি বলেন, আমাকে যেভাবে ইউনাইটেড স্টেট কমান্ড করতে পারে। আমি সেভাবে ইউনাইটেড স্টেটসে গিয়ে হুমকি-ধামকি দিতে পারছি না, পাররো না। এটা আরেকটা বাস্তবতা।

গত ১৫ নভেম্বের ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন।
আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে ঘোষণা দিয়েছে। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী ঘোষণা দেয়ার পথে। তবে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে হরতাল-অবরোধ অব্যঅহত রেখেছে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সমমনা দলগুলো। তাদের দাবি একতরফা নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।

নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ মন্তব্য করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ওরা (বিদেশি) একটাই দাবি করে যে, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনটা ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হতে হবে এবং কোনোরকম কারচুপির আশ্রয় নেওয়া যাবে না। এই নির্বাচনের ফেয়ারনেসকে উপলক্ষ করে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভক্ত হয়ে গেছে। এটি কাঙ্ক্ষিত ছিল না। সেজন্যই বলা হয় ক্রেডিবল ইলেকশন। ইলেকশন জিনিসটা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য, চোখে দেখা যায় না, যাবেও না।

তিনি বলেন, তারপরও বলা হয় নির্বাচন ক্রেডিবল, ফ্রি হয়েছে কিনা, ফেয়ার হয়েছে কিনা। এই পাবলিক পারসেপশনের কোনো মানদণ্ড নেই। তবুও জনগণকে বলতে হবে নির্বাচন ফ্রি এবং ফেয়ার হয়েছে। সার্বিকভাবে যদি জনগণ বলে থাকে যে, এবারের নির্বাচনটা ফ্রি ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়েছে, তাহলে এটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আমরা একটা ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল ইলেকশন চাচ্ছি।

সিইসি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচন নিয়ে দেশ সংকটে আছে; বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে সমভাবে দায়িত্বশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গণতন্ত্রে আমরা স্থিরভাবে এগোতে পারেনি। সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য সবাইকে সমভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, সিল মারাটা নির্বাচনের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। পেশি শক্তির ব্যবহার করা, কালো টাকা ব্যবহার করা এবং কারচুপি করা, দীর্ঘদিন ধরে চর্চার মাধ্যমে একটা অপসংস্কৃতির চর্চা হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা নিরন্তর চেষ্ট করছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

সিইসি বলেন, ইসি দেখতে চায় ভোটাররা দলে দলে আসছেন, তারা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন এবং সেই লাইনও যেন চলমান থাকে এবং ভোটারা নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসছে।ভোট আয়োজনে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সহায়তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন এককভাবে নির্বাচন করে না, করতে পারে না।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK