শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১১:৫৪

সুষ্ঠু নির্বাচনে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখছেন কানাডিয়ান পার্লামেন্ট

সুষ্ঠু নির্বাচনে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখছেন কানাডিয়ান পার্লামেন্ট

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থার কথা ব্যক্ত করেছেন কানাডিয়ান পার্লামেন্টের ৮ সদস্য। কানাডা পার্লামেন্টের এই ৮ সিনেটর বাংলাদেশ-কানাডা পার্লামেন্টারি বন্ধুত্ব গ্রুপের সদস্য। ৮ নভেম্বর লেখা এই চিঠি বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে গ্রুপটি। একই দিনে এই গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড রেডেকুপ ব্যক্তিগত টুইটার হ্যান্ডেলে স্বাক্ষরিত চিঠিটির একটি ছবি পোস্ট করেছেন।

বাংলাদেশ-কানাডা পার্লামেন্টারি বন্ধুত্ব গ্রুপ

বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে কানাডিয়ান সিনেটর এবং হাউস অব কমন্সের সদস্যদের একটি দল গত বছর কানাডা-বাংলাদেশ সংসদীয় বন্ধুত্ব গ্রুপ গঠন করেছে। কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাকে বাংলাদেশ-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি অসামান্য ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে যখন দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন করছে।

চিঠির বক্তব্য

বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের ওপর আস্থা জ্ঞাপন করে এই গ্রুপের ৮ সদস্য আশা ব্যক্ত করেছন যে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লাখো কোটি জনগণ নিসংকোচে এবং বিনা বাধায় তাদের রায় জানাতে পারবে ভোটের মাধ্যমে।

চিঠিতে শেখ হাসিনা সরকারের কাছে যেসব বিষয় আশা করা হয়—

মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতকে রক্ষা করা হবে। ভোট ডাকাতি, ভোট জালিয়াতিকে কোনো আবস্থাতে হতে দেওয়া হবে না। সরকার যেকোনো মূল্যে সহিংসতা রোধ করবে এবং দল মত নির্বিশেষে সর্বসাধারণের অধিকার রক্ষা করবে। বাংলাদেশের প্রতিটা যোগ্য নাগরিকের ভোট প্রদানের অধিকারকে সমুন্নত রাখবে। দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি পক্ষপাতিত্বহীনতা নিশ্চিত করা হবে।

বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন

চিঠিতে আরও বলা হয়, কানাডিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা মনে করে, বর্তমান সরকার উন্নয়ন ও গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার এই ধারাকে চলমান রাখবে এবং সেটা করবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশ ভ্রমণের সারমর্ম কানাডিয়ান পার্লামেন্টে

কানাডিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যদের স্বাক্ষরিত চিঠির আগে নভেম্বরের ৮ তারিখ কানাডিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য চন্দ্রা আরিয়া বাংলাদেশ ভ্রমণ শেষে উনার বক্তব্য পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সফর করেছি, যেখানে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি হিন্দু মন্দির, বৌদ্ধ মঠ এবং একটি গির্জাও পরিদর্শন করেছি এবং আমি কয়েক ডজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে দেখা করেছি। আমি অনেক ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে দেখা করেছি। দেশে স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক নীতিতে নিশ্চিয়তার সাথে বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর ধরে চমৎকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখছে। এভাবে এর লক্ষ লক্ষ নাগরিককে দারিদ্র্য থেকে তুলেছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো অবকাঠামো প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করছে এবং চাকরির সৃষ্টি করছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি কানাডাকে বাংলাদেশকে সমর্থন ও শক্তিশালী করার জন্য পশ্চিমা গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি; যাতে এটি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে। বাংলাদেশ যাতে অত্যধিক প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে তা নিশ্চিত করার জন্য এটি প্রয়োজন। ’

কানাডা-বাংলাদেশ সম্পর্ক বাংলাদেশ কানাডা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক অর্ধশতকের। ১৯৭২ সালে কানাডা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অর্থ সামাজিক ইস্যুতে কানাডা বাংলাদেশের প্রতি সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কানাডা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং বিশেষ করে শ্রমিক, বিভিন্ন সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং নারী ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে সব সময়ই কথা বলেছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে কানাডা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে সম্মান করা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করে।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন যারা

১. ব্র্যাড রেডেকপ, এমপি, সাসকাটন পশ্চিম। চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি গ্রুপ। ২. সালমা আতাউল্লাহজান, সিনেটর, অন্টারিও এবং ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি গ্রুপ। ৩. সালমা জাহিদ, এমপি, স্কারবর্গ সেন্ট্রাল এবং ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি গ্রুপ। ৪. লুক ডেসিলেটস দুপাতে, এমপি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি গ্রুপ। ৫. কেন হার্ডি, এমপি, ফ্লিটউড-পোর্ট কেলস। ৬. লারি ব্রুক, এমপি, ব্রান্ডফোর্ড-ব্রান্ট। ৭. রবার্ট কিচেন, এমপি, সৌরিস-মুজ মাউন্টেইন এবং ৮. কেভিন ওয়াহ, এমপি, সাস্কাটুন গ্রাসউড।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ
আরও সংবাদ