সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৮:১২
ব্রেকিং নিউজ

আমরা স্মার্ট সমাজ তৈরিরও কাজ করছি : প্রধানমন্ত্রী

আমরা স্মার্ট সমাজ তৈরিরও কাজ করছি  : প্রধানমন্ত্রী

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : এভিয়েশন খাতে সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরাসরি পাইপ লাইনে জেট ফুয়েল আসবে শাহজালাল বিমানবন্দরে। তিনি বলেন, এতে সময় ও অর্থও বাঁচবে। এই প্রকল্পের কাজ চলছে। একদিন দেশের মানুষ চাঁদেও যাবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির পাশাপাশি স্মার্ট সমাজ তৈরিরও কাজ করছি। ৭ অক্টোবর শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

আওয়ামী লীগের বাইরে ২৯ বছর যারা ক্ষতমায় ছিল, তারা দেশের মানুষকে কিছুই দিয়ে যেতে পারেননি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভিয়েশন খাতে সব দিয়েছি আমরা। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ছিল না। আমরা সরকারে এসেই বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম ও সিলেট এই দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এ সময়টাই বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, যদি পারেন তাহলে ৯৬ সালে পূর্ব পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল সেটা একটু দেখবেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ সড়ক পথ রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পথ সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশ যাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেই।  

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের বিমানবন্দর আরও পর্যাপ্ত আধুনিক, সুযোগ-সুবিধা যাতে সৃষ্টি হয়, তার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, আমাদের দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা বসবাস করে। তারা বিভিন্ন দেশে কাজ করে। আমাদের রেমিট্যান্স পাঠায়। তারাও যাতায়াত করে।  

এভিয়েশন খাতের নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, একসময় কক্সবাজার ও হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর হবে এশিয়ার আঞ্চলিক হাব। ভবিষ্যতে এখানে আরও একটা রানওয়ে করা হবে। কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সেখানে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দর তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমানে আন্তঃজেলা সংযোগের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। এ জন্য দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরগুলোকেও অত্যাধুনিক করা হচ্ছে। এগুলো অত্যাধুনিক হলে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী এসব বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট চলবে।

সরকারপ্রধান জানান, দেশের এভিয়েশন খাতকে আরও উন্নত করার জন্য কিছু এয়ারবাস কেনা হবে। এ জন্য কোম্পানিটি বাংলাদেশ সরকারকে লোন দেবে বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, যারা বিগত সময়ে ক্ষমতায় ছিল তারা দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যেতে পারেনি। এভিয়েশন খাতের যত উন্নয়ন তা সবই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সরকারের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে দুই কোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বেকার মাত্র ২ দশমিক। দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আমরা গ্রামের মানুষকে নিয়ে কাজ করছি। দেশের ১০ কোটি মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছি। নানা বাধা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে থার্ড টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। বিশেষ করে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান।  

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ার এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাপানের সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার মাসাহিরো কমুরা।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল সোয়া ১০টায় থার্ড টার্মিনালে আসেন। গেটে সরকারপ্রধানকে বরণ করেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর ও বিমান সচিব মোকাম্মেল হোসেন। তিনি গেট হয়ে প্রবেশের আগে ছোট ছোট মেয়েরা দেশের গানে নেচে অভিবাদন জানান। এরপর তিনি যান লাগেজ চেকিং পয়েন্টে। তাকে ১০টা ১৮ মিনিটে প্রতীকী বোডিং পাস দেওয়া হয়। পরে তিনি ইমিগ্রেশন কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান। ১০টা ২১ মিনিটে তিনি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পৌঁছেন।

প্রি বোডিং সিকিউরিটি জোন থেকে বোডিং ব্রিজ হয়ে চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে সরকারপ্রধান নেমে যান দ্বিতীয় তলার অনুষ্ঠানস্থলে। তার আগে তিনি থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকালে তোলা ফটো গ্যালারি পরিদর্শন শেষে যান বোডিং ব্রিজের দিকে। সবশেষ তিনি মঞ্চের সামনে আসেন ১০টা ৩২ মিনিটে। এরপর আসন গ্রহণ করেন। পরে সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করেন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।  
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ
আরও সংবাদ