মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১০:৩৪

ভোলায় ৮৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ শেষের দিকে

ভোলায় ৮৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ শেষের দিকে

উত্তরণবার্তা ডেস্ক  : জেলায় ৮৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ শেষের দিকে রয়েছে।
আন্ত:যোগাযোগ ব্যবস্থা সূদৃঢ় করার লক্ষ্যে সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজার থেকে চরফ্যাশন উপজেলার বাবুরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯৬ কিলোমিটার সড়কটির ১৮ ফুট থেকে ৩০ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। জেলার প্রধান এই সড়কটি দুই পাশে আরো ১২ ফুট বৃদ্ধি পেলে সড়কে শৃঙ্খলা আনায়ণ, যানজট নিরোসন ও দুর্ঘটনারোধ করা অনেকটাই সম্ভব হবে।
এর মাধ্যম স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। একইসাথে নিশ্চিত করা হবে সড়কের নিরাপত্তা। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে বরিশাল বিভাগের মধ্যে একমাত্র ভোলাতেই থাকবে এত দীর্ঘ প্রশস্ত সড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রশস্ত করার মাধ্যমে পূরণ হয়েছে ভোলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।
‘ভোলা পরান তালুকদারহাট চরফ্যাশন চরমানিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ণ প্রকল্প’র আওতায় স্থানীয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে সড়কটির উন্নয়ণ কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৮৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৯৬ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৮৩ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম  বলেন, এই সড়কটিতে পূর্বে চারটি সরু বেইলি ব্রীজ ছিলো। সেগুলো ভেঙ্গে বর্তমানে পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হলো বঙ্খালি ব্রিজ, বোরহানউদ্দিন ব্রিজ, ঢাওরী ব্রিজ ও শষিভূষণ ব্রিজ। পূর্বে বেইলি ব্রিজ দিয়ে দু’টি ট্রাক বা বাস পাশাপাশি যেতে পারতোনা, একটি সেতুতে উঠলে অন্যটি অপেক্ষা করত। কিন্তু নতুন নির্মিত ব্রিজগুলো চালু হওয়াতে বর্তমানে সেই সমস্যা হচ্ছেনা।
তিনি বলেন, পূর্বের সেতুতে ধারণ ক্ষমতা ছিলো মাত্র ৫ থেকে ৭ টন। আর বর্তমানে নির্মিত সেতুগুলোতে অনায়াসেই ৩০ টন বহন করতে পারে। এছাড়া এই সড়কে মোট ৪১টি কালভার্টের মধ্যে ৩৯টিই নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুটোর কাজ চলছে। জনগণের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তরান্বিত করতেই সরকার এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। কাজের গুণগত মান শতভাগ বজায় রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
ভোলা চরফ্যাশন সড়কের যাত্রীবাহী বাসের চালক হানিফ মিয়া বলেন, বর্তমানে সড়কের কাজ চলমান থাকায় গাড়ি চালাতে তাদের কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। আগে ভোলা থেকে চরফ্যাশন যেতে সময় লাগতো ২ থেকে আড়াই ঘন্টা। আর সড়কটির কাজ শেষ হলে সময় লাগবে মাত্র এক থেকে সোয়া ঘন্টা। এই সড়কের যাত্রী লোকমান হোসেন ও আবুল কালাম বলেন, দুই লেন সড়কটির প্রত্যেক লেনে ৬ ফুট করে প্রশস্ততার ফলে একটি বাস বা ট্রাক অন্যটির পাশ দিয়ে সহজেই যেতে পারবে। রাস্তার পাশে পড়ে যাওয়া বা দুর্ঘটনার আশংকা থাকবেনা বল্লেই চলে।
স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. নোমান হোসেন বলেন, তাদের ব্যবসার কাজে কোন দিন একাধিকবার চরফ্যাশন আসা যাওয়া করতে হয়। কিন্তু পূর্বে সড়ক সরু থাকায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় হতো। এখন আর সেই সমস্যা থাকবেনা। ব্যবসার কাজে আসবে বাড়তি গতি। এক কথায় যান চলাচল অনেক সহজ ও নিরাপদ হবে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ভোলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল মমির টুলু  বলেন, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ণ ঘটে, সেখানে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। ভোলা একটি প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় জেলা। ভোলার প্রধান এই সড়কটি প্রশস্তকরণ সম্পন্ন হলে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য সহজেই আনা-নেওয়া করতে পারবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রসার ঘটবে পর্যটন শিল্পের।

উত্তরণবার্তা/ডেল

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ