মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০১:০০

ঈদের আগেও যাত্রীর চাপ নেই দৌলতদিয়া ঘাটে

ঈদের আগেও যাত্রীর চাপ নেই দৌলতদিয়া ঘাটে

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই পালটে গেছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটের দৃশ্যপট। ব্যস্ততম সেই ঘাটে এখন নেই কোনো যানজট, কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই সরাসরি ফেরিতে উঠছে সকল যানবাহন। লঞ্চঘাটের একই অবস্থা সেখানেও নেই কোনো যাত্রীর চাপ। সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে খালি লঞ্চগুলো। ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও কোনো ঘাটেই নেই কোনো ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ। এবারের ঈদে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই পারাপার হবে যাত্রীরা এমন আশাই করছেন ঘাট কর্তৃপক্ষ। ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ২০টি ফেরি ও ৩২টি লঞ্চ চলাচল করবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে। সেই সঙ্গে ঘাটকে যানজটমুক্ত রাখতে ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখী মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সে জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রা পথে ভোগান্তি, যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, সড়কে যানজট নিরসনসহ ঘাট এলাকায় সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি করবে প্রশাসন।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পূর্বে যাত্রী ও যানবাহনের ভোগান্তির অন্যতম নৌপথ ছিল দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। এরুটে ঐ সময় ২০ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঘাট পাওয়ার ফেরি অপেক্ষায় থেকেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেতু চালু হওয়ার সুফলে ফেরির জন্য এখন আর এসব ঝামেলা নেই। কমেছে ভোগান্তি, স্বস্তি ফিরেছে ঘাট দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের মধ্যে। এই নৌরুট দিয়ে পারাপাররত যাত্রী ও চালকরা জানান, পূর্বে এ রুটে যাতায়াত করতে দীর্ঘ ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখন স্বল্প সময়ে দ্রুত গন্তব্যে যেতে পারি। ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী ছুটলেও যানবাহন ও যাত্রীদের যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় না।বিআইডব্লিউটিএর দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের জন্য ৩২টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২০/২২টি লঞ্চ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচল করবে, বাকি লঞ্চগুলো কাজির হাট-আরিচা, আরিচা-দৌলতদিয়া রুটে চলাচল করবে। তবে ঈদের আগে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে যাত্রীর চাপ বাড়লে কাজির হাট-আরিচা রুট থেকে প্রয়োজনে কিছু লঞ্চ এ রুটে আনা হবে। তবে যাত্রী ধারণক্ষমতা মেনেই পারাপার করা হবে।

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জে এম সিরাজুল কবির বলেন, পবিত্র ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের  যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীতেও থাকবে নৌ-পুলিশের টহল। লঞ্চে ও ফেরিতে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নিতে দেওয়া হবে না। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে এখন প্রতিনিয়ত ১২ থেকে ১৪টি ফেরি চলাচল করলেও পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে ছোটবড় ২০টি ফেরি চলাচল করবে। আশা করি, এবারের ঈদে দৌলতদিয়া ঘাট যানজট মুক্ত থাকবে এবং ঘরমুখী মানুষ স্বস্তিতে বাড়িতে পৌঁছাতে পারবে। ঈদের সময় যানবাহনের চাপ বাড়লেও কোনো দুর্ভোগ হবে না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বর্তমান তিনটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তিনটি ঘাটে রয়েছে ছয়টি পকেট। এই ছয় পকেটে ছয়টি ফেরি ভিড়তে পারবে। আশাকরি এবারের ঈদ যাত্রা হবে স্বস্তির।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK