কিছু কিছু খাবার রয়েছে যা রোজার মধ্যে আপনাকে সর্বাধিক স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন লাভে সহায়তা করবে। একটি পুষ্টিকর ছোট খাবার তালিকা হতে পারে আপনার আদর্শ সেহরি। রোজার সময় আপনার দেহটি আক্ষরিক অর্থে নিজেই নিজেকে খায়, আমি জানি এটি বেশ ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে তবে এটি আসলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত। উপোস করার সময় আপনার দেহ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অণু এবং সেলুলার অর্গানেলগুলি পুনরুদ্ধার করে এমন সেলুলার সেলফ-ক্লিনিজিং প্রক্রিয়াকে বলা হয় অটোফ্যাজি (Autophagy)।
এমসিটি (মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস, যা নারকেল এবং পাম তেলের মধ্যে পাওয়া যায়) এবং ডিএইচএ (এক ধরনের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, যা পাঙ্গাশ এবং স্যালমন মাছ, বাদাম, স্পিরুলিনা, শেত্তলা ইত্যাদিতে থাকা এক ধরণের ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড) অটোফ্যাজি প্রক্রিয়া চলতে সাহায্য করে এবং কোষের ঝিল্লির তরলতা বজায় রাখে।
উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার (যেমন ইসব গুলের ভূষি এবং ফাইবার সাপ্লিমেন্ট) খাওয়া আপনার শরীরকে হজম এবং অন্ত্রের গতি কমিয়ে দিতে সহায়তা করবে। এটি ধীরে ধীরে আপনার রক্ত প্রবাহে পুষ্টিকর এবং ইনসুলিন নিঃসরণ করবে এবং রোজার সময় আপনার রক্তে ব্লাড সুগার উঠা-নামা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
সংক্ষিপ্তসার হিসাবে, সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় রাখবেনঃ
-
তৈলাক্ত মাছ
-
২-৩ লিটার পানি
-
নারকেল তেল বা পাম অয়েল দিয়ে রান্না করা খাবার
-
খেজুর - খেজুরে প্রচুর পরিমাণে কপার, সেলেনিয়াম, এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। শরীরকে মুহূর্তেই চাঙা করে এ ফল। তাই সেহরিতে অবশ্যই ৩ থেকে ৪টা খেজুর খেতে হবে।
-
বাদাম, বীজ
-
টক দই
-
লবণ এবং ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন হোল গ্রেইন, সবুজ পাতাযুক্ত শাক সবজি
-
ইসব গুলের ভূষি
পরিশেষে
সেহরি খাওয়া রোজার জন্য শর্ত নয়। তাই সেহরি না খেলেও রোজা হয়ে যাবে। কিন্তু, অনেকে সেহরীতে খাবার না খেয়ে শুধু একগ্লাস পানি খেয়ে রোজা রাখেন। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এভাবে রোজা রাখলে ক্লান্ত হয়ে যাবেন।
আর মনে রাখতে হবে যে সেহরি খাওয়া সুন্নত। অল্প খেলেও সুন্নত পালন হয়ে যাবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, সেহরি খাওয়ার মাঝে রয়েছে অনেক বরকত। যারা সাহরি খায়, তাদের প্রতি রয়েছে আল্লাহর দয়া ও ফেরেশতাদের দোয়া। তাই সেহরিকে সুন্নত মনে করে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা উচিৎ।
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক