মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০০:৪৭

পঞ্চগড়ের অগ্নিসন্ত্রাস মনিটর হয়েছে ঢাকা ও লন্ডন থেকে : তথ্যমন্ত্রী

পঞ্চগড়ের অগ্নিসন্ত্রাস মনিটর হয়েছে ঢাকা ও লন্ডন থেকে   :  তথ্যমন্ত্রী

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর অগ্নিসন্ত্রাসী হামলা এবং উস্কানি বিএনপি-জামাতের ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের নৈরাজ্যের মতোই এবং ঢাকা ও লন্ডন থেকে তা মনিটর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পঞ্চগড়ে গন্ডগোল লাগিয়ে সারাদেশে একটা গন্ডগোল লাগানোর চেষ্টা তাদের ছিল। তবে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি, যে বা যারাই এর সাথে যুক্ত থাকুক না কেন, কোনো দল বা কোনো রং সেটি না দেখে ব্যবস্থা নিতে এবং সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে একটি দল পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ফুলতলা আহমদনগরে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শনে যান। বোদা’র সংসদ সদস্য রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড় জেলা সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, জেলার ডিসি মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা এসময় উপস্থিত ছিলেন। 
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা বলেছিল ১০ ডিসেম্বরের পরে সরকারকে তারা টেনে ফেলে দিবে। কিন্তু তারা সরকারকে ফেলে দিতে গিয়ে ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা রশি ছিড়ে পড়ে গেছে, তাদের কোমর ভেঙ্গে গেছে।গত ২, ৩, ৪ মার্চ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর যে নারকীয় হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, সেটি সরেজমিনে দেখার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা এসেছি উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, এই জঘন্য হামলা পরিচালনা করার আগে থেকেই কিন্তু উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় আহমদিয়া জামাতের মাহফিলকে কেন্দ্র করে আগে থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। উস্কানি ছড়িয়ে সংগঠিত করে তারপর এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছে অর্থাৎ যারা সারা বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের সেই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাঁশের কেল্লা’ কারা পরিচালনা করে আপনারা জানেন। সেই বাঁশের কেল্লা পেইজ থেকে এবং কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে ‘ঐক্যপরিষদে’র পক্ষ থেকে রুমিন ফারহানা, বিএনপির সাবেক এমপি হারুন অর রশীদের ফেসবুক পেজ থেকে  উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। একইসাথে এখানকার যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তার মোটর সাইকেল সংক্রান্ত উস্কানি ছড়িয়েছে, শিবিরের তেঁতুলিয়ার সভাপতি, সেও উস্কানি ছড়িয়েছে এবং এখানে যারা যুক্ত ছিলো, তাদের বেশিরভাগই বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মী। তারা ব্যবহার করেছে অন্য ব্যানার, কিন্তু মূলত: তারা বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মী।
 
ক্ষতিগ্রস্তদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান বলেন, এখানে ধাক্কামারা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের মোরশেদ মিয়ার ঘর এবং গরুসহ সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে। এখানকার পৌর যুবলীগের সহসভাপতি শাহিন আলমের বাড়িঘরে হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, সব জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীরা পুলিশ বক্সে হামলা পরিচালনা করেছে। সেখানে থাকা বয়স্ক পুলিশ কনস্টেবল কোনোরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। তারা ডিসি, এসপি অফিসেও হামলা পরিচালনার চেষ্টা করেছে, র‌্যাবের গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সের ওপর, শহরে দোকানপাটের ওপর, গণমাধ্যমের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। আমাদের দলের অনেক নেতার ঘরবাড়িও তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে নৈরাজ্য করেছিল সেইভাবে করেছে।তিনি আরও বলেন, ধর্মের নামে এভাবে কারো ওপর হামলা পরিচালনা করা ইসলাম কোনোদিন অনুমোদন করে না। রাসুল (সা.) এভাবে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য কখনো বলেন নাই। এভাবে ইসলামের নামে যারা মানুষের ওপর হামলা পরিচলনা করে তারা ইসলামেরও শত্রু। তারা ইসলামের গায়ে কালিমা লেপন করছে। এই শত্রুদের প্রতিহত করার জন্য আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করতে বদ্ধপরিকর।ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে পঞ্চগড় শহরে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আয়োজিত দলের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন আওয়ামী লীগের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের  দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। 
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ