বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৬:৩৮

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতার প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রকাশিত ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম-২০২১’-শীর্ষক প্রতিবেদনে সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধ দমনে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাফল্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ঘৃণাভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতার কারণে বেশকিছু হতাহতের ঘটনা ঘটলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার সন্ত্রসাবাদ বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ওপর জোর দিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো অনলাইনে নিয়োগ ও সহিংস ঘটনায় অর্থায়ন বাড়ালেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিট অধিকাংশ হামলা প্রতিরোধ করেছে এবং সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদীদের গ্রেফতার এবং আটকের জন্য সরকার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করেছে। উগ্রবাদীদের প্রচার, অর্থায়ন প্রতিরোধ করতে এবং অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যকে রুখতে ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) তৈরি করেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসিইউ), অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। এসব ইউনিটের বেশকিছু সাফল্যের বর্ণনা দিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ‘অন্যান্য কাউন্টান টেরোরিজম সম্পর্কিত ইউনিটগুলোর মধ্যে রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ডস, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি, এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।’ 
 
এর বাইরেও মেট্রোপলিটন পুলিশ সাইবার, সোয়াত এবং বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে প্রশিক্ষণ মার্কিন সরকার অ্যান্টি টেরোরিজম ট্রাইব্যুনালের (এটিটি) বিচারক এবং প্রসিকিউটরদের তদন্ত পরিচালনা, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের মামলার বিচার পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা এসব ক্ষেত্রে সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে আরও প্রশিক্ষণ এবং সহায়তার জন্য মার্কিন সরকারকে অনুরোধ করেছে।বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্থল ও সামুদ্রিক সীমান্তে টহল দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে এবং আধুনিক প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনছে। এর বাইরে বিমানবন্দরে কার্গো ও যাত্রীদের পরীক্ষা করার জন্য আধুনিক যন্ত্রাংশ ও লোকবল বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশে তিনটি উল্লেখযোগ্য সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে এবং এগুলো প্রতিরোধ করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে একটি ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা একটি মার্কিন রিমোট-কন্ট্রোলড রোবট দিয়ে বোমা নিষ্ক্রিয় করেছিল। 
 
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ১৭ মে এবং ১১ জুলাই নারায়ণগঞ্জে দুটি ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ১৬ সেপ্টেম্বর গুলশান ডিপ্লোমেটিক অঞ্চলে দেলোয়ার হোসেন নামক এক ব্যক্তি একটি গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে মারে। ওই ‘সন্ত্রাসী’ মনে করেছিল সে একটি মার্কিন দূতাবাসের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা মেরেছে এবং তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়।  পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) ২০২১ সালে ৪০টি তদন্ত করেছে এবং ৮৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। চট্টগ্রাম পুলিশ ৪০টি ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। অ্যান্টি টোরোরিজম ইউনিট তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং ধারণা করা হয় তারা প্রায় ৭৫টি মামলার তদন্ত করেছে।প্রতিবেদনে মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই সময়ে ১০ জন সন্ত্রাসীকে সুপথে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে সিটিটিসি এবং তাদের প্রত্যেককে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাদ্রাসা কারিকুলামে আধুনিকায়ন করেছে সরকার এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সন্ত্রাস দমনে কাজ করছে পুলিশ। সাতটি অ্যান্টি টেরোরিজম ট্রাইবুন্যালে ৭০০টি মতো মামলা রয়েছে। আটটি সাইবার ট্রাইবুন্যালে ৪ হাজার ৬০০ এর মতো মামলা বিচারাধীন আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
উত্তরণবার্তা/এআর
 
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ