শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৩:৫৯

ভাষা দিবসে চেরী ব্লোসমস স্কুলে বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত

ভাষা দিবসে চেরী ব্লোসমস স্কুলে বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর এই দিনটি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। সেদিন এদেশের ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক মজুর সবাই বাংলাকে মাতৃভাষার করার জন্য আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলনে পাকিস্তানি মিলিটারি নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছিলেন। ফলে সেখানে শহীদ হন সালাম-রফিক-বরকত সহ নাম-না-জানা আরো অনেকে। এদেশের আপামর জনতা বাংলায় কথা বলার জন্য বুকের তাজা রক্ত দিতে হয়েছিল; যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। পরবর্তীতে ইউনেস্কো এই দিবসকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। সেদিন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সূচনা ঘটে।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজধানির চেরী ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্কুল প্রাঙ্গণে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এসময় জাতীয় সঙ্গীত ও ভাষার গান পরিবেশন করা হয়। এরপর শিশুদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক অধ্যক্ষ ড. সালেহা কাদের। উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ড. আফসানা আমীন।
 
ড. সালেহা কাদের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন এটি সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।এই দিনটি ঐতিহ্যের পরিচয়কে দৃঢ় করেছে। বাংলা ভাষার রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসন লাভ করেছে। আমাদের উচিত সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি, বৈচিত্র্যের প্রচার করা এবং সকলের মাঝে মাতৃভাষার যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণে উৎসাহিত করা।তিনি আরও বলেন, আমাদের মাতৃভাষা অত্যন্ত প্রাঞ্জল আর হৃদয়গ্রাহী। এ ভাষার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অমর কাব্যগন্থ্য ‘গীতাঞ্জলী’ রচনা করে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এ ভাষার অসাধারণ প্রজ্ঞাবান মানুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঙ্গের সাধারণ পরিষদে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দিয়ে বাংলাকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব পরিমণ্ডলে।তিনি বলেন, একুশ আমাদের মুক্তি ও প্রাপ্তির চেতনা হিসেবে কাজ করেছে। আমাদের মহান একুশ আজ স্বদেশের আঙিনা পেরিয়ে বৈশ্বিক চেতনায় পরিণত হয়েছে। মহান একুশের আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশের পরবর্তী আন্দোলনের বীজতলা তৈরি হয়েছে। 
 
এই দিনে আমরা বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে সমন্বিত করার শপথ নিতে হবে আর তাইতো আমরা আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি বিকাশের জন্য নানান প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকি। যাতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ভাষা ও নিজের আপন অস্তিত্বের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত থাকে।উল্লেখ্য, চেরী ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাংলা সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীদেরকে বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের গান হাসন-লালন, বৈশাখের গান, বৃষ্টি বন্দনার গান, দ্বৈত সংগীত, জারি-সারি, ভাটিয়ালী, পালাগান, পুঁথিপাঠ, চিত্রাঙ্কন শেখানো হয়। যাতে করে শিশুরা বাংলা সংস্কৃতির চর্চা করতে পারে। এছাড়া জাতীয় দিবসগুলো যথাযথ মর্যাদায় পালন করে থাকে। এছাড়া শিক্ষার গুণগত মান প্রসারের লক্ষে স্কুলটিতে রয়েছে একাধিক ক্লাব। যে ক্লাবগুলো শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে ভূমিকা রাখছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের নিয়ে গঠিত হয়েছে 'চেরী ব্লোসমস মাদার্স ক্লাব'। শিশুদের মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ডাক্তারি পরামর্শ, আইনগত পরামর্শ, রান্না শেখানো, ফ্রী ইংলিশ লার্নিং কোর্স, মেহেদী উৎসব, পিঠাপুলি উৎসবসহ অসংখ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অভিভাবকরা মেতে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান দেশ ও দেশের বাহিরে রয়েছে দারুণ সুনাম। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ল্ড হায়েস্ট নাম্বার পেয়ে আমেরিকা, ইউ-কে, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন মানসম্মত প্রতিষ্ঠানে স্কলারশিপ নিয়ে অধ্যয়ন করছে। 
উত্তরণবার্তা/এআর 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK