শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৯:১৭
ব্রেকিং নিউজ

নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস : রাষ্ট্রপতি

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নিজ ভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুভাষিক শিক্ষার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে। 
 
আগামীকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এই আশা প্রকাশ করেন। আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। তবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির যথাযথ চর্চা ও সংরক্ষণে আমাদের আরো যতœবান হতে হবে।’
 
তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। তাই উন্নত বিশ্বের সাথে সমানতালে এগিয়ে যেতে বর্তমান প্রজন্মকে বাংলার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত বিভিন্ন ভাষার ওপর প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ এর নেতৃত্ব দেন এবং কারাবরণ করেন। স্মরণ করি তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ সকল ভাষা সংগ্রামীকে, যাঁদের দূরদৃষ্টি, অসীম ত্যাগ, সাহসিকতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারি ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। বাঙালি পায় মাতৃভাষার অধিকার।
 
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণ ও জাতিগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ ২১ ফেব্রæয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। স্মৃতিবিজড়িত এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহীদ রফিক, সালাম, বরকত, জববার, শফিউরসহ নাম না জানা শহীদদের।’ 
 
আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে ব্রিটিশ শাসিত ভারত ভেঙে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের জন্ম হয়। হাজার কিলোমিটার দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হলে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে। তিনি বলেন, মূলত ভাষা আন্দোলন ছিলো আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষারও আন্দোলন। আমাদের স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অমর একুশের অবিনাশী চেতনাই যুগিয়েছে অফুরন্ত গ্রেরণা ও অসীম সাহস। ফেব্রæয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই অর্জিত হয় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি এবং সে ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে আসে বাঙালির চিরকাঙ্খিত স্বাধীনতা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 
 
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৯৯ সালে কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশীর প্রাথমিক উদ্যোগ এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিক চেষ্টায় জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের একটি অন্যতম গৌরবময় অর্জন। মাতৃভাষা এবং নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে এ দিবসটি উদ্যাপন একটি অনন্য উদ্যোগ। 
 
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে তিনি আশা প্রকাশ করেন, মহান একুশের চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ জাগ্রত হবে, গড়ে ওঠবে একটি বৈষম্যহীন বর্ণিল বিশ্ব।
উত্তরণবার্তা/এসএ
 
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ