সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৫:১৮
ব্রেকিং নিউজ

পাহাড়ী জমিতে সুশান্তের স্বপ্নের কুল বাগান

পাহাড়ী জমিতে সুশান্তের স্বপ্নের কুল বাগান

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : পাহাড়ের পরিত্যক্ত জমিতে চার প্রজাতির কুলের চাষ করে সফল হয়েছেন রাঙ্গামাটির সফল কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। জেলার সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নে সোনারাম কার্বারি পাড়ায় কাপ্তাই হ্রদ ঘেষা পাহাড়ের পরিত্যক্ত জমিতে কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নের কুল বাগান। সুশান্তের কুল বাগানে এরই মধ্যে পাকতে শুরু করেছে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মিরী আপেল কুল ও দেশি জাতের কুল। পাহাড়ি উঁচু-নিচু ঢালে সুশন্তের লাগানো কুল বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে সুস্বাদু মিষ্টি কুল। বর্তমানে সুশান্ত তার বাগানে উৎপাদিত কুল প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন। তার বাগান দেখে স্থানীয় বেকার অনেকে আকৃষ্ট হয়ে বাগান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাহাড়ের এ সফল কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা পরিত্যক্ত পাহাড়ী জমিতে কুল চাষ করে সফল হওয়ার বিষয়ে বলেন, নিজের বেকারত্ব দূর করতে ২০১৬ সালে পৈত্রিকভাবে প্রাপ্তপ্রায় ১০ একর জমির বেশীরভাগ অংশজুড়েই সুশান্ত গড়ে তোলেন বিভিন্ন প্রজাতির কুলের বাগান। তিনি জানান, প্রথম দিকে সুশান্তর স্ত্রী তার স্বপ্নের বাগান গড়ে তোলার কাজে সহযোগিতা করলেও সুশান্তর বাগানের পরিধি এখন অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে তার বাগানে এখন প্রায় ১০-১২জন শ্রমিক কাজ করছে করছে বলে জানান সুশান্ত। বর্তমানে সুশান্ত বরই বিক্রি শুরু করেছেন। এবার বরই বিক্রি করে তিনি ৫-৭লক্ষ টাকা আয় করবেন বলে আশা। কুল ছাড়াও সুশান্ত তার পুরো জমিতেই ২০ রকমের ফলের চাষ শুরু করেছেন। এর মধ্যে ৪ প্রজাতির কুল ছাড়াও আম, কাঁঠাল, লটকন, লিচু, আমলকী, পেঁপে, তেঁতুল, মাল্টা, লেবু, বেল, নারিকেল, সুপারি, রাম্বুটানসহ অন্যান্য বারোমাসি ফল রয়েছে। সরকারী সহায়তা পেলে তার বাগানটিতে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ করা সম্ভব বলে জানান সুশান্ত। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সুশান্ত এখন পাহাড়ের এক মডেলের নাম। বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকের জন্য আবেদন করেছেন পাহাড়ের সফল এ কৃষি উদ্যোক্তা ।

সুশান্তের কুল বাগানের শ্রমিক মঙ্গল মুনি চাকমা বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে সুশান্তের বাগানে কাজ করছি। এ বাগানে কাজ করে তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক চাহিদা মিটান। এ বাগানে মঙ্গল মুনিসহ আরো ১০/১২জন স্থানীয়  বেকার যুবক কাজ করে তাদের বেকারত্ব দূর করেন বলে জানান মঙ্গল মুনি চাকমা। আরেক শ্রমিক সুকুমার চাকমা জানান, আমি শুরু থেকেই সুশান্ত দাদার কুল বাগানে কাজ করছি। তিনি আরো জানান, বাগানে সম্পূর্ণভাবে কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই আমরা বিষমুক্ত কুল বাগান গড়ে তুলেছি। পাখিদের থেকে বাঁচাতে শুধু গাছের চারপাশে জাল ঘিরে দেয়া হয় বলে জানান সুকুমার। এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা জেলার একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি জানান, দেশি কুলের পাশাপাশি বরই বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল এর বর্তমান বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সুশান্ত চার ধরনের কুল চাষ করে সফল হয়েছে উল্লেখ করে এ কৃষি কর্মকর্তা বাসসকে আরো জানান, তার কুল বাগানে আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার গিয়েছি। সুশান্তকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।পাহাড়ের পরিত্যক্ত জমিতে দেশি কুলের পাশাপাশি বরই বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল এর ব্যাপক চাষ করে সফলতা পাচ্ছেন এখানকার কৃষক। পাহাড়ে কুল চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারী সহায়তা কামনা করেছেন কৃষি উদ্যোক্তারা।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK