১৭তম স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক এম আলী আহমেদ এ রায় দেন। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় আসামি আবু সাঈদ পলাতক ছিলেন। এ ছাড়া মামলার অপর পলাতক আসামি আবু সাঈদের ১৮তম স্ত্রী তাছকিরা বেগমের বিরুদ্ধে সাক্ষীদের জবানবন্দি প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের তাজিম উদ্দিনের মেয়ে তানজিনা খাতুনের সঙ্গে ওই উপজেলার পালগড় গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে আবু সাঈদের বিয়ে হয়। তানজিনা ছিলেন আবু সাঈদের ১৭তম স্ত্রী। পরবর্তীতে আবু সাঈদ তাছকিরা বেগম নামে আরো এক নারীকে বিয়ে করেন। এরপর ১৫ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে আবু সাঈদ (তৎকালীন বয়স ৪২) তার নববিবাহিত স্ত্রী তাছকিরার (তৎকালীন বয়স ২০) সহযোগিতায় ২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তানজিনাকে (তৎকালীন বয়স ৩২) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।

ওই ঘটনায় পরের দিন পীরগঞ্জ থানায় দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তানজিনার বাবা। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক। ৩০ জুলাই সেটি আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ২৬ জুলাই জামিন পেয়ে কিছুদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পলাতক রয়েছেন মামলার আসামি আবু সাঈদ। অন্যদিকে তাছকিরা বেগম ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে ২০১৪ সালের ১৮ মে থেকে পলাতক। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি তাজিবুর রহমান লাইজু জানান, অভিযুক্ত আবু সাঈদ যৌতুকের লোভে একের পর এক বিয়ে করছিলেন। তানজিনাকে বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুকের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দেন তার বাবা। বাকি ১৫ হাজার টাকার দাবিতে তানজিনাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আবু সাঈদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে।
উত্তরণবার্তা/এআর