রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৫:৪০
ব্রেকিং নিউজ

হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিকেজিসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পুনর্মিলনী

হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিকেজিসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পুনর্মিলনী

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : হবিগঞ্জের  ঐতিহ্যবাহী বসন্ত কুমারী গোপাল চন্দ্র (বিকেজিসি) সরকারি  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।জেলার সবচেয়ে প্রাচীন নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।এই প্রতিষ্ঠান থেকে শত শত শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তা ও সাহিত্যিক শিক্ষা গ্রহণ করেছে। দুইজন নারী সংসদ সদস্যও এই বিদ্যালয় থেকেই বেড়ে উঠেছেন। আলোকিত মানুষ গড়ার এই প্রতিষ্ঠানটি দেখতে দেখতে শত বছর অতিক্রম করলো। শত বছরের এই মহেন্দ্রক্ষণটি বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা ‘স্মৃতি রোদ্দুরে’ শিরোনামে পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাঙ্গিয়ে তুলেছিলেন শুক্রবার। বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষে পদার্পণ করায় অনেকদিন পূবেই উদ্যোগ নেয় হয় বড় একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের। এই উপলক্ষে হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়ামে নির্মাণ করা হয় বিশাল মঞ্চ। চারিদিকে বিভিন্ন স্টল। আর স্কুলের সকল প্রবেশ পথ করা হয় আলোকসজ্জা। স্কুলের সকল ভবনও আলোকসজ্জা করা হয়। শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপি কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও উৎসব শুরু হয়ে যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই। প্রিয় প্রাঙ্গনে সাবেক শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকেন  এবং আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন।

এরই মাঝে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হওয়ায় পুরো শহরটিই হয়ে উঠে উৎসব মুখর। বর্তমান শিক্ষার্থীরা ব্যান্ড নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে আনন্দ উল্লাসে এগিয়ে যেতে থাকেন বয়স্করাও। ছিলনা তাদের মাঝে কোন ক্লান্তির ছাপ।র‌্যালি শেষে জালাল স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসাবে বেলুন উড়িয়ে পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এডভোকেট মো. আবু জাহির। স্কুল থেকে ১৯৬২ সালে এসএসসি পাশ করা বন্দনা দত্তের সভাপতিত্বে ও শতবর্ষ পূণর্মিলনী উৎসবের আহবায়ক রুমা মোদকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, সরকারী বৃন্দাবন কলেজের অধ্যক্ষ ইলিয়াছ বখত চৌধুরী জালাল, বিদ্যুৎ বিভাগের টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল কবীর। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তিতলী পাল এসেছে তার মা বাবলী চৌধুরীর সাথে। মা-মেয়ে একই স্কুলে লেখাপড়া করতে পেরে তারা আনন্দ প্রকাশ করে।

দিনব্যাপি উৎসবে সাবেক কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।উৎসব কমিটির আহবায় রুমা মোদক জানান, ১৯৬০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে পড়শোনা করা শিক্ষার্থীদের এতে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশ, বিদেশের ১হাজার ২৫০ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। তবে উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ৪/৫ হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী
১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারী হবিগঞ্জে নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে গোপাল চন্দ দাস কতৃক প্রদত্ত ৩.৫ একর জমির উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বসন্ত কুমারী ছিলেন গোপাল চন্দ্র দাসের সহধর্মিণী। ইংরেজী ও সংস্কৃতকে প্রাধান্য দিয়ে এম.ই (মিডল ইংলিশ স্কুল) নামে পরিচিতি পায়। এখানে ক্লাশ সিক্স পর্যন্ত পড়ানো হত। তখন স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন মিস এন্ডুস নামে এক বৃটিশ নারী। স্কুলটি সরকারীকরণ করা হয় ১৯৬৭ সালের ৩১ জুলাই। ২০১১ সালে স্কুলে ডাবল শিফট চালু করা হয়।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK