শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ২১:৩৬

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার লাইব্রেরি : এখন কারেকশন সেন্টার

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার লাইব্রেরি : এখন কারেকশন সেন্টার

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার লাইব্রেরি কারাবন্দীদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে। কারাবন্দীরা কারাগার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়ছেন। নিজেদের জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করছেন। অপরাধ প্রবনতা থেকে বের হয়ে আসতে এই লাইব্রেরি তাদের সহযোগিতা করছে। কারাবন্দী অনেকেই কারগার থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন। গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার কার্যালয় সূত্রে জান গেছে, কারাবন্দীদের বই পড়ার সুযোগ সরকার অনেক আগেই করে দিয়েছে। এই কারণে আগে থেকেই কারাগারে লাইব্রেরি স্থাপন করেছে সরকার। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জেলা প্রশাসক হিসেবে গোপালগঞ্জে যোগদান করেন ২০১৯ সালে। তিনি জেলা কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মুজিব কর্ণার স্থাপন করেন। সেই সঙ্গে জেলা কারাগার লাইব্রেরিটি তিনি সমৃদ্ধ করেন। এখানে এখন প্রায় ১ হাজার বই রয়েছে। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও খ্যতনামা কবি সাহিত্যিকদের বই এখানে স্থান পেয়েছে। অপরাধ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করণ বইও রয়েছে এই লাইব্রেরিতে। কারাবন্দী রুবেল (৩৫) বলেন, কারাগার লাইব্রেরিতে মান সম্পন্ন বই রয়েছে। এখান থেকে বই নিয়ে পড়ি। সময় কাটে। জ্ঞান অর্জন হয়। অপরাধ প্রবনতা থেকে বের হয়ে আসার উপায় বই পড়ে জেনেছি। জেল থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন রুবেল।

কারাবন্দী ইমরান (২৩) বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য শান্তিময় জীবন। কারগারে এসে বই পড়ে এটি উপলব্ধি করতে পারছি। বই আমাকে জ্ঞানের পাশাপশি অন্ধকার থেকে আলোর পথে হাঁটতে সহায়তা করছে। কারগার থেকে বের হয়ে বইয়ের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সবক্ষেত্রে শান্তির চর্চা করব। কারাগার এখন কারেকশন সেন্টারে পরিনত হয়েছে। এটি আমার কাছে ভাল লাগছে। কারাবন্দী সমর (৪০) বলেন, কারগার লাইব্রেরি থেকে নিয়মিত বই পড়ছি। বই আমার দিব্যচক্ষু খুলে দিয়েছে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি আমার দায়িত্ববোধ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কারাগার থেকে বেরিয়ে এগুলো পালন করতে চেষ্টা করব। গোপালগঞ্জে জেলা কারগারের লাইব্রেরির দায়িত্বপ্রাপ্ত রওশন শেখ (৪৫) বলেন, কারগার লাইব্রেরিটি মুজিববর্ষে আরো সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এখন এখানে মানসম্মত অনেক বই রয়েছে। নতুন-নতুন বই তাদের পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করছে। তাই কারাবন্দীদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা কারগারের সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, গত ২৮ আগস্ট জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা কারগার লাইব্রেরিতে ১০০ নতুন বই দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত মানবিক জেলা প্রশাসক। সবসময় কারাবন্দীদের নিরাপদে ও সুরক্ষিত রাখতে খোঁজ খবর রখেন। নতুন-নতুন উদ্যোগ নিয়ে কারগারকে ঢেলে সাজিয়েছেন। তার হাত ধরেই কারগার লাইব্রেরি বন্দীদের কছে একটি গ্রহণযোগ্য ও আকর্ষণীয় লাইব্রেরির মর্যাদা পেয়েছে। বই পড়ে কারাবন্দীরা অপরাধ প্রবনতা থেকে বেরিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তারা ভাল কাজের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটি আমাদের সমজের জন্য একটি সু-সংবাদ।গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, জ্ঞান অর্জন, সময় কাটানো ও অপরধ প্রবণতা থেকে বের করে আনতে কারগার লাইব্রেরিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ ও জনপ্রিয় সব উপন্যাসের সমাহার ঘটানো হয়েছে। এখান থেকে বই নিয়ে কারবন্দীরা পড়াশোনা করে জ্ঞানের আলো ছড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশা।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK