শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১১:৫৫

একটু হাসুন : ‘হেল্প’ ‘হেল্প’

একটু হাসুন : ‘হেল্প’ ‘হেল্প’

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : কিসমত সাহেব অফিস থেকে ফিরছিলেন, সন্ধ্যা হয় হয় এমন সময়। মেইন রোড থেকে গলির মুখে যখন নামলেন, তখনই চোখে পড়ল এক তরুণী সিনেমা স্টাইলে ‘হেল্প’ ‘হেল্প’ বলে চিৎকার করছে। পেছনে কয়েকজন তরুণ তাকে ধাওয়া করছে।কিসমত সাহেব দেরি না করে ৯৯৯-এ ফোন দিলেন। এমন সময় দেখা গেল সেই মেয়ে দৌড় থামিয়ে দাঁড়িয়ে গেল, আর বাকি ছেলেরাও হাসতে হাসতে তার কাছে গিয়ে বলল, ‘সুপার হয়েছে!’ কিসমত সাহেব এবার হতভম্ব হয়ে বুঝতে পারলেন, পুরো ব্যাপারটাই ছিল অভিনয়ের অংশ! উনি শুধু শুধু পুলিশে কল দিয়েছেন। পুলিশ এলে তিনি কোনোমতে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়লেন।

বাসায় ফিরে মনে মনে ঘটনাটা আবারও স্মরণ করলেন। চিন্তা করলেন এখন থেকে সমাজের সবকিছু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোনো কিছুতে সহজে সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। ফেসবুকে যেমন ইদানীং হারিকেন, গুলতি কিংবা লজেন্সের ছবি দিয়ে লেখা থাকে শুধুমাত্র ‘নব্বই দশকের’ বাচ্চারাই বুঝবে! ঠিক তেমনি কিছু জিনিস আছে দেখলে এখনকার বাচ্চারা এমনিতেই বুঝতে পারত এটা শুটিং। অথচ তিনি বোঝেননি। তাই হুট করে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। এমন সময় বিদ্যুৎ চলে গেল। অনেকদিন বিদ্যুৎ-টিদ্যুৎ না যাওয়ায় তেমন কোনো প্রস্তুতিও ছিল না। স্মার্টফোনের লাইটেই তাই চার্জার লাইট বা মোম খুঁজতে লাগলেন কিসমত সাহেব।

পরদিন অফিসে এসে জানতে পারলেন, সরকার রীতিমতো রুটিন প্রকাশ করেছে কোন এলাকায় কখন বিদ্যুৎ থাকবে না। একসময় পরীক্ষার রুটিন প্রিন্ট করার যেমন একটা উত্তেজনা ছিল। সেই একই উত্তেজনায় মানুষ লোডশেডিংয়ের রুটিন সংগ্রহ করছে। কেউ প্রিন্ট করে নিচ্ছেন। কেউ স্মার্টফোনে সেভ করে নিচ্ছেন। পুরোই হুলস্থুল কারবার। রুটিন চেক করে দেখা গেল কিছুক্ষণ পর অফিসে বিদ্যুৎ থাকবে না।

কিসমত সাহেব অবাক হয়ে লক্ষ করলেন, সবার মাঝে চাপা উত্তেজনা! সব অফিসে যে আইপিএস কিংবা জেনারেটর থাকে ব্যাপারটা এমন নয়। কিসমত সাহেব একটি বেসরকারি অফিসে কর্মরত। এখানে পাঁচ-দশ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ গেলে ঘেমে নেয়ে উঠতে হয়। অথচ ঘণ্টাখানেকের জন্য বিদ্যুৎ যাওয়ার ঘোষণায় সবার মাঝে উৎসবের আমেজ! কেউ কেউ প্ল্যান করছেন, এ সময় বাইরে গিয়ে একটু ঘুরে আসবেন। একজন বুদ্ধি দিলেন, রাস্তার ওপারে বিদ্যুৎ যাবে পরের ঘণ্টায়। সুতরাং রাস্তার ওপারের শপিং মলে গিয়ে এসিতে সময় কাটানো যেতে পারে। এমনিভাবে একেকজন একেক পরিকল্পনায় ব্যস্ত। সবাই ব্যাপারটা উপভোগ করছেন!
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK