বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:৪০

গোপালগঞ্জে সারের মজুদ পর্যাপ্ত

গোপালগঞ্জে সারের মজুদ পর্যাপ্ত

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : গোপালগঞ্জ জেলায়  সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এখানে সারের কোন সংকট নেই। সঠিকভাবে সারের ব্যবহার নিশ্চিত করতে  গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সার উত্তোলন,মজুদ ও বিপণন ব্যবস্থা তদারকি করছে জেলা ও উপজেলা  সার বীজ  মনিটরিং কমিটি। ইউনিয়ন পর্যায়ের সারের ডিলার ও খুচরা সার ডিলারের গুদাম প্রতিদিন তদারকি করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। খুচরা সার সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকের কাছে বিক্রি নিশ্চিত করতে প্রতিটি দোকানে সারের মূল্য সম্বলিত সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। খুচরা সার ডিলার প্রতি একজন করে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। খুচরা সার ডিলার সরকার নির্ধারিত   ২২ টাকা কেজি দরে ইউরিয়া,টিএসপি,  ১৬ টাকা কেজি দরে ডিএপি ও ১৮ টাকা কেজি দরে এমওপি সার বিক্রি হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা বেশি দামে সার বিক্রি করলে ডিলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন। এছাড়া কৃষক সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার কিনতে পারছেন কি না তাও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন। এসব কারণে  গোপালগঞ্জে সার নিয়ে ডিলাররা কারসাজি করার সাহস পাচ্ছেন না।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, আগস্ট মাসে আমরা গোপালগঞ্জ জেলায় ২ হাজার ৫৭৬ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের বরাদ্দ পাই। এরমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে ২ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। এখন মজুদ রয়েছে ১ হাজার ৪০১ মেট্রিক টন। টিএসপি বরাদ্দ হয়েছে ৮২০ মেট্রিক টন। উত্তোলন করা হয়েছে ৪২৪ মেটিক টন। গত জুলাই মাসের কিছু টিএসপি মজুদ ছিল। সেই সাথে আগস্টের মজুদ যোগ করে টিএসপির মোট মজুদ রয়েছে ৪১৬ মেট্রিক টন। ডিএপির বরাদ্দ ২ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন। উত্তোলন করা হয়েছে ১ হাজার ৩৮৭ মেট্রিক টন। মজুদ রয়েছে ১ হাজার ১৬৮ টন। এমওপি বরাদ্দ ২৫০ মেট্রিক টন। উত্তোলন করা হয়েছে ১৩৯ মেট্রিক টন। মজুদ রয়েছে ১১৩ মেট্রিক টন। ওই কর্মকর্তা অরো জানান,গোপালগঞ্জ জেলায় ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে পাইকারী ৭১ জন সার ডিলার রয়েছেন। এছাড়া খুচরা সার ডিলার রয়েছেন ৬৩০ জন।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এ জেলায় কৃষিতে এখন সারের চাহিদা তুলনামুলকভাবে কম। এখন মাৎস্য ঘেরে সার ব্যহৃত হচ্ছে। তারপরও এখানে সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আগামী বোরো মৌসুমেও এ জেলায় সার সংকটের কোন আশংকা নেই। এ জেলা থেকে অন্য জেলায় সার পাচার বন্ধে প্রতিদিন  মনিটরিং ও তদারকির পাশাপাশি বরাদ্দ, উত্তোলন ও মজুদের হিসাব রাখা হচ্ছে। সেই সাথে খুচরা ডিলারের দোকানে সারের খুচরা মূল্য সম্বলিত সাইনেবোর্ড টানানো হয়েছে। প্রতিটি দোকানে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামে সার কিনতে পারছেন কি না  তাও খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। কোন অনিয়ম পেলেই ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর উনিয়নের সার ডিলার মেসার্স গৌর চন্দ্র বিশ্বাসের সত্বাধিকারী কাজল বিশ্বাস বলেন, মনিটরিং ব্যাপক জোরদার করেছে কৃষি বিভাগ। প্রতিদিনই তাদের সারের মজুদসহ সব ধরণের হিসাব দিতে হচ্ছে। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে এসে গুদাম পরিদর্শণ করছেন। সারের উত্তোলন, বিপণন ও মজুদের হিসাব নিচ্ছেন। এমনকি সার কোথায় বিক্রি করছি তারা সেটিও তদন্ত করে দেখছেন। এ কারণে এ জেলায় সারের মজুদ ভালো রয়েছে। খুচরা সার বিক্রেতা মাঝিগাতী ইউনিয়নের কাজী পান্নু বলেন, আমরা সারের খুচরা মূল্য সম্বলিত সাইবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই আমরা কৃষকের কাছে সার বিক্রি করছি। ট্যাগ অফিসার হিসেবে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এটি তদারকি করছেন। তাই বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের কৃষক রহিম মিয়া বলেন, কর্মকর্তারা এভাবে সার মনিটরিং করলে আমরা ন্যয্যমূল্যে সারা বছর সার পার। এতে আমদের খুব উপকার হচ্ছে। সারের জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে  না। এটি অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করছি। কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, প্রতিদিন সার গুদাম পরিদর্শন করছি। প্রতিদিনই সার উত্তোলন, মজুদ ও বিপণন রিপোর্ট দিতে হচ্ছে। পাচার রোধ ও সরকার নির্ধারিত মুল্যে কৃষকের কাছে সার বিক্রি নিশ্চিত করতে আমাদের তদারকি আরো জোরদার করেছি। সারের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমাদের এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া সার নিয়ে আমরা কৃষক, ডিলার , জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সচেতন করছি।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK