রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৯:৩৫
ব্রেকিং নিউজ

কুবির ওয়েবসাইটে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন চালুর দাবি

কুবির ওয়েবসাইটে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন চালুর দাবি

উত্তরণবার্তা  প্রতিবেদক : সম্প্রতি সনদ জালিয়াতির অভিযোগ এনে দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি গ্রহণ করবে না বলে যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিয়েছে বলে জানায় কয়েকটি গণমাধ্যম। এ তালিকায় থাকা ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সাথে ‌‘কুমিল্লা’ থাকায় বিতর্কের মুখে পড়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সনদ যাচাই পদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইন ডাটাবেজে সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। 
 
তাদের দাবি, নামের মিল থাকায় নামসর্বস্ব একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে সনদ যাচাই করতে গিয়ে উচ্চশিক্ষাসহ বিভিন্ন চাকরির বোর্ডে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের৷  জানা যায়, দেশ এবং বিদেশের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সনদ যাচাই, গ্র্যাজুয়েট সার্চ ফ্যাসিলিটি এবং স্টুডেন্ট ডাটাবেইজ সুবিধা দিয়ে থাকে৷সেখানে ইউনিক স্টুডেন্ট নম্বরসহ প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন দিলে সনদটি কিংবা শিক্ষার্থী ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিনা তা জানা যায়৷ 
 
বাংলাদেশের ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটসহ আরও বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে সনদ ও স্টুডেন্ট ভেরিফিকেশন করা যায়৷ তা ছাড়া, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টো, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নসহ বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদ ভেরিফিকেশন এবং প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের আইডেন্টিটি ভ্যারিফাই করা যায়৷আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদন করা যায় সনদ ভেরিফিকেশনের জন্য৷ কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি৷ 
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সেলিম রেজা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ডগুলো যদি কোটি কোটি শিক্ষার্থীর তথ্য অনলাইন সার্ভারে রাখতে পারে, তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পারবে না কেন? কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ যাচাই করার আগে কোনোভাবেই নিশ্চিত হওয়া যাবে না এটি সঠিক নাকি ভুয়া৷ 
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও ইউনিক সনদ প্রদান করা দরকার৷ এবং তা অনলাইনে ভেরিফাই করার সুযোগ রাখা দরকার৷ এতে করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সনদ জালিয়াতি বন্ধ হবে৷কোনো বিড়ম্বনা ছাড়াই সনদ যাচাই করাও সম্ভব হবে৷ 
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহাদী হাসান বলেন, বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই তাদের ওয়েবসাইটে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন অপশনটি রেখেছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যে কেউ চাইলেই দেখে নিতে পারেন আবেদনকারীর সনদ বৈধ কিনা। কারণ, কেউ কেউ ফেক সনদ তৈরি করে যাচ্ছেন পছন্দমত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে। এই ফেক সনদ দিয়ে  সফলও হচ্ছেন। এতে আসল আর নকলের বেড়াজালে পড়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় কোনো কোনো আসল সার্টিফিকেট অর্জনকারীদের। প্রতিষ্ঠানের সুনামেও আসে অপ্রত্যাশিত আঘাত।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন ডাটাবেজ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  বিশেষ করে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে ইচ্ছুক তাদের সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে সার্টিফিকেট যাচাই করার সুযোগ না থাকে, তাহলে সেটি ম্যানুয়ালি ভেরিফিকেশন করতে হয়। অনলাইনে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট জালিয়াতি অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অথেন্টিসিটি যাচাই করা খুবই সহজ হয়। 
 
ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, এটি যদি করা যায় তাহলে বিষয়টি আরও ট্রান্সপারেন্ট হবে৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে কিছু সমস্যা আছে৷ ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে৷ জুনের মধ্যে ডেভেলপ হয়ে যাবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দপ্তরে ইআরপি সসফটওয়্যারও ডেভেলপ করার কাজ চলছে৷ যেহেতু আমরা অটোমেশনের দিকে যাচ্ছি, আশাকরি এ বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটে ইনক্লুড করবে৷ 
 
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মইন অনলাইনে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের ব্যাপারটি মানতে নারাজ৷ তিনি বলেন, কোনো ইউনিভার্সিটিতে সনদ অনলাইনে ভেরিফিকেশন করতে পারবে না৷এটা তো গোপন ব্যাপার৷ আমার সার্টিফিকেট তো কেউ দেখতে পারার কথা না৷ কোনো ইউনিক নম্বর দিয়েও তো দেখতে পারার কথা না৷  ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন সময় সাপেক্ষ ব্যাপার কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, আগে এটি সময়সাপেক্ষ ছিল৷ এখন ই-মেইলের মাধ্যমে সনদ ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়ে দেওয়া যায়৷ সনদ ভেরিফিকেশনের জন্য কেউ আমাদের ই-মেইল করলে আমরা ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়ে দেবো৷
উত্তরণবার্তা/এআর 
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK