সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ
করলা আমরা নিয়মতই খাই কিন্তু আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে করলার রস পান বা করলা খাওয়ার নিয়ম অনেকেই জানি না। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে করলার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এই সব্জিটিকে অনেক বেশী প্রশংসা করা হয়েছে। করলা বা উচ্ছে ঔষধি গুণে ভরপুর একটি সব্জি। এতে আছে প্রচুর আয়রন বা লোহা; ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ ও বি৯; এবং ফাইবার। এছাড়া করলার এন্টিঅক্সিডেন্ট লুটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী। করলা রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড হ্রাস করে এবং ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বৃদ্ধি করে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে করলার উপকারিতা
করলার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এটা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহুলভাবে প্রশংসিত একটি সব্জি। আয়ুর্বেদ গ্রন্থ ‘দ্রব্যগুণ ভিজনানা’ এ করলার বর্ণনা দেয়া হয়েছে ‘তিক্ত’ এবং ‘শক্তিশালী’ হিসেবে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে করলা ত্রিদশা বিশিষ্ট সব্জি, কারণ এটা ৩টি দশা – ‘ভাটা’, ‘কাফা,’ এবং ‘পিথা’ – রোধ করতে পারে। আয়ুর্বেদ মতে করলার তিক্ততা এবং পাতায় আছে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাই আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন করলার রস বা রান্না করা করাল খাওয়া উচিৎ।
করলার রস কখন পান করবেন?
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে করলার রস সকালে খালি পেটে পান করা উচিৎ। করলার রস অনেকের সহ্য নাও হতে পারে, তাই প্রথমে ছোট ছোট চুমুকে পান করার চেষ্টা করুন। খালি পেটে করলার রস পান করলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে, লিভার পরিশোধিত হয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
করলার রস কিভাবে বানাবেন?
উপাদান
-
২টি মাঝারি সাইজের নরম করলা
-
২ চা চামচ লেবুর রস
-
১/৪ কাপ আপেল জুস বা পানি
-
লবণ পরিমাণ মত
-
১ চা চামচ মধু বা গুড়
-
আদা
প্রণালী
করলা মাঝখান দিয়ে কেটে ভেতরের অংশ ও বীজ ফেলে দিন
এখন এটা করলা ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন
একটি ব্লেন্ডারে সব উপাদান এবং সামান্য পানি ঢেলে ব্লেন্ড করুন।
ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পান করুন।
করলার রস পানে যেসব উপকার পাবেন
-
খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর মাত্রা কমবে
-
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে
-
দৃষ্টিশক্তির উন্নয়ন হবে
-
আলসার সারবে
-
লিভার ভাল থাকবে
-
রক্ত পরিশোধিত হবে
-
গেঁটে বাত দূর হবে
-
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে
-
উদ্বেগ দূর হবে
-
ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল থাকবে
-
চুলের খুশকি দূর হবে ও চুল মসৃণ থাকবে
-
চুল পাকা বন্ধ হবে
-
সোরাইয়াসিস রোধ হবে
-
চুলকানির সমস্যা দূর হবে
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক