রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৯:৪৭
ব্রেকিং নিউজ

প্রতিদিন ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিদিন ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ
 
ইসবগুলের ভুসির সাথে আমরা কমবেশি পরিচিত। বেশির ভাগ মানুষেরই ধারণা শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেই এটা খাওয়া হয়। আসলে এছাড়াও ইসবগুলের রয়েছে আরও অনেক গুণাবলী। আসুন জেনে নিই ইসবগুলের অজানা অনেক উপকারিতা।
 
ইসবগুল কি?
ইসবগুল (Psyllium husk) পাওয়া যায় প্লান্টাগো ওভাটা (Plantago ovata) নামক এক ধরনের গাছের বীজ থেকে। এটা এক ধরনের রেচক বা ল্যাক্সেটিভ (laxative) হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ইসবগুল মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের এমনকি হৃদপিন্ড এবং অগ্নাশয় (Pancreas) সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
 
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ
১ টেবিল চামচ ইসবগুলে আছেঃ
ক্যালরি------৫৩%
ফ্যাট---------০%
সোডিয়াম---১৫ মিলিগ্রাম
কারবোহাইড্রেট (শর্করা)---১৫ গ্রাম
ক্যালশিয়াম----৩০ মিলিগ্রাম
আয়রন (লোহা)----০.৯ মিলিগ্রাম
 
ইসবগুলের উপকারিতা
হজম শক্তির উন্নতি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুল
 
ইসব গুল আমাদের অন্ত্রে (gut) থাকা পানিকে শুঁষে নেয় এবং বাওয়েল মুভমেন্ট (bowel movement) সহজ করে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। যাদের ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (Irritable bowel syndrome) এর সমস্যা আছে তারা ইসবগুল খেলে এই সমস্যা দূর হবে। ইসবগুল এক ধরনের প্রিবায়োটিক (prebiotic) যা আমাদের অন্ত্রে থাকা ভাল ব্যাক্টেরিয়াকে সাহায্য করে। এই ব্যাক্টেরিয়া আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে সহজ এবং মলকে নরম করে। মল ত্যাগের সময় অনেকের ব্যাথা হয় তাও কমিয়ে দেয় ইসবগুল।
 
হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ইসবগুল
গবেষনায় দেখা গেছে যে দ্রবণীয় ফাইবার বা সলিউবল ফাইবার (soluble fiber) কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একটি গবেষণায় দেখা যায় – অন্ততঃ ৬ সপ্তাহ প্রতিদিন ইসবগুল খেলে অতিরিক্ত ওজন সম্পন্ন ব্যক্তির কোলেস্টেরল কমে আসে। এতে তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। অনেক গবেষণায় প্রমাণিত যে, ইসবগুল হৃদরোগ, ব্লাড প্রেশার কমানো, রক্তে লিপিডের মাত্রা সঠিক এবং হৃদপিন্ডের মাংসপেশীকে শক্ত করে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
 
ওজন কমাতে ইসবগুল
ইসবগুল ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা কমায়। সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের আগে ১ টেবিল চামচ ইসবগুল পানিতে মিশিয়ে খেলে খাওয়া ইচ্ছা ও ক্ষুধা কমে যাবে। যারা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত ইসবগুল খেতে পারেন।
 
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইসবগুল
ইসবগুল খেলে তা রক্তে থাকা ইনসুলিন এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যান্য আঁশ বা ফাইবারের তুলনায় ইসবগুল ভাল কাজ করে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং কোষ্ঠ কাঠিন্যে দিনে ২ বার (প্রতিবার ১০ গ্রাম) ইসবগুল খেলে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোষ্ঠ কাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে আনে। শুধু তাই নয় এটা ব্লাড সুগার, কোলেস্টেরল এবং অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে আনে।
 
কতটুকু খাবেন?
অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় ইসবগুল খেলে কোন সমস্যা হয় না। প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ ৩ বার খাওয়া যায় এবং অবশ্যই তা পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। এছাড়া সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
 
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK