শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১১:২২
ব্রেকিং নিউজ

কোনো বাধাই দেশের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না : প্রধানমন্ত্রী

কোনো বাধাই দেশের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না   :  প্রধানমন্ত্রী

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : অনেক হিসাব-নিকাশই পাল্টে দিয়েছে করোনা। কিন্তু অতিমারির আঘাত সত্ত্বেও স্থবির হয়নি দেশের অগ্রযাত্রা। বরং গত ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। গৌরবময় ও কৃতিত্বপূর্ণ এ অর্জন উপলক্ষ্যে ২ জানুয়ারি রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় দৃঢ়-প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের জন্য অভিবাদন জানানো হয় তাকে।
 
 সফলতা রাতারাতি আসে না। এর জন্য প্রয়োজন শ্রম আর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। বক্তব্যে সে কথাই তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এ সাফল্যের জন্য আমি সবাইকে বাহবা দিই। সবাইকে ধন্যবাদ দিই। কারণ সবার সহযোগিতা না পেলে এই উত্তরণ সম্ভব হতো না। ১৩ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ও মাথাপিছু আয় গত ১৩ বছরে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
 
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। আইএমএফ-এর হিসাব মতে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। ১৩ বছর সময়কালে আমাদের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬.৩ শতাংশ, যেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর গড় প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৫.১ শতাংশ।
 
এসময় স্বল্পোন্নত থেকে উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় 'স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজি' প্রণয়নের কাজ চলছে বলেও জানান সরকার প্রধান। বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণকে টেকসই করতে একটি জাতীয় মসৃণ উত্তরণ কৌশল বা স্মুথ ট্রানজিশান স্ট্যাটেজি প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছি। এই জাতীয় দলিলে উত্তরণের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব ধরনের দিক-নির্দেশনাসহ কার্যকর কৌশল থাকতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, সম্যক গবেষণা ও সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রমাণনির্ভর সময়োপযোগী কার্যকর কৌশল প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাই। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় দেশের নতুন ও তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, চিরদিন কেউ বাঁচে না, কিন্তু যে কাজ আমরা করে গেলাম সে গতি যেন হারিয়ে না যায়, চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়, সেটাই আমরা চাই।
 
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আর নতুন প্রজন্মের কাছে এটাই আমাদের দাবি। অন্তত আমি তাদের এইটুকু আহ্বান করব, দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে- সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই উন্নতি, সেখানেই স্বস্তি। এসময় চলার পথ যতো প্রতিকূলই হোক না কেন, জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, গেল ১৩ বছরে দেশের গড় প্রবৃদ্ধি ৬.৩ শতাংশ। যেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর গড় হার ৫.১।
এই অর্জনের জন্য দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি এই অর্জনে বন্ধুপ্রতীম যেসব দেশ পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশকে সেসব দেশের প্রতিও ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। 
 
প্রকৃতপক্ষে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক আমাদের নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেখানে আমরা থেমে থাকিনি, এগিয়ে চলেছি। আমরা সব শর্ত পূরণ করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছি যাতে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পাই। ২০২১-এর ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা ও সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে বলেও মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
উত্তরণবার্তা/এআর
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ