শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ২১:৫৯

বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরি করত তারা

বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরি করত তারা

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীতে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তারা বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরিসহ নানা অপরাধ করত। ধানমন্ডির একটি বাসায় চুরির রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এ তথ্য জানতে পেরেছে র‌্যাব। ১১ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে র‌্যাব-২ এর একটি দল মোহাম্মদপুর ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. নাসির শেখ, মো. ফরহাদ, মো. সেলিম এবং মো. আজাদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত দুটি দেশীয় অস্ত্র, চারটি মোবাইল ফোন এবং গলিত সোনা ও স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা ৭ ডিসেম্বর রাতে ধানমন্ডির একটি বাসার জানালার গ্রিল কেটে চুরি করে। তারা বাসার ভেতর আলমিরা, ওয়ারড্রব ইত্যাদি ভাঙচুর করে। প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। চুরির ঘটনাটি প্রবাসে অবস্থানরত বাড়ির মালিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তা আলোড়ন সৃষ্টি করে।

খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর এলাকাকেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। এ চক্রের সদস্য ৬-৭ জন। সবাই বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করছে। চোর চক্রের এক সদস্য অটোরিকশার চালক। সে অটোরিকশা চালানোর আড়ালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফাঁকা বাসা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের খোঁজ নেয়। গত ৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডি এলাকায় ফাঁকা বাড়ির সন্ধান পায় সে। সে বিষয়টি চক্রের অপর সদস্য নাসিরকে তা জানায়। নাসির তার মেসে পাঁচ সহযোগীকে নিয়ে চুরির পরিকল্পনা করে। ৭ ডিসেম্বর একটি ভ্যান নিয়ে চুরির উদ্দেশ্যে ধানমন্ডির ওই বাসায় যায় তারা। আবাহনী মাঠের পাশে চারজনকে নামিয়ে দিয়ে ভ্যানচালক অপেক্ষা করতে থাকে। বাড়ির নিচে একজনকে পাহারায় রেখে তিনজন পাঁচতলা বাড়ির তৃতীয় তলায় সানশেড বেয়ে ওপরে ওঠে এবং জানালার গ্রিল কাটে। নাসির ও ফরহাদ বাসায় ঢোকে। তারা বাসার ভেতরে একটি সিসি ক্যামেরা দেখতে পেয়ে তা কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখে। বাসার আলমারি এবং ওয়ারড্রবের ড্রয়ার ভেঙে ১টি গলার হার, ৫টি কানের দুল, ১ জোড়া চুড়ি এবং নগদ অর্থ চুরি করে। পরদিন সকালে তারা চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পূর্বপরিচিত আজাদের স্বর্ণের দোকানে যায় এবং ৫০ হাজার টাকায় চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে। এসব টাকা নাসির, ফরহাদ, সেলিমসহ দলের অপর দুই সদস্য ভাগ করে নেয়। আজাদ স্বর্ণালঙ্করগুলো কেনার সঙ্গে সঙ্গে তা গলিয়ে ফেলে।

নাসির স্যানিটারি মিস্ত্রি। এ পেশার আড়ালে সে পাঁচ-ছয় বছর ধরে চুরি-ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ফরহাদ ফল বিক্রেতা। সে এই চোর চক্রের অন্যতম সদস্য। ২০১৭ সালে সে গ্রেপ্তার হয়েছিল। সেলিম সবজি বিক্রেতা। সে এই চোর চক্রের নিয়মিত সদস্য। আজাদ স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী। বসিলায় তার স্বর্ণের দোকান আছে। সে চোরাই স্বর্ণালঙ্কার কেনাবেচায় জড়িত।
উত্তরণবার্তা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ