শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৪:৪৮

টেস্টের দ্বিতীয় দিনে নির্বিষ বোলিংয়ে বাংলাদেশের হতাশাময় দিন

টেস্টের দ্বিতীয় দিনে নির্বিষ বোলিংয়ে বাংলাদেশের হতাশাময় দিন

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : দ্বিতীয় দিন হাসান আলীর দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। ৪ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে স্বাগতিকরা অলআউট হয় ৩৩০ রানে। হাসান একাই নেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশকে অলআউট করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে পাকিস্তান। লাঞ্চ বিরতির পর দ্বিতীয় সেশনে পাকিস্তানের হয়ে ওপেন করতে এলেন আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিক। শুরুতে সাবধানী খেললেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সাবলীলভাবে ব্যাট করছে পাক দুই ওপেনার। 
 
ইতোমধ্যে অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন অভিজ্ঞ আবিদ আলী। ৮৪ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটির দেখা পান এই ব্যাটসম্যান। অন্যদিকে তার সঙ্গী অভিষিক্ত আবদুল্লাহ শফিক খেলছেন দুর্দান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানেই ফিরতে পারতেন শফিক। ১৩তম ওভারে তাইজুল ইসলামের করা বল সরাসরি গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে। লিটনের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে তাইজুলের পক্ষে থেকেও আসেনি আবেদন, করেননি রিভিউও। ফলে সে যাত্রায় রক্ষা পায় পাকিস্তান। চা বিরতির আগে দ্বিতীয় সেশনে ২৯ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলেছে পাকিস্তান। সেশন শেষের আগে সেই আবিদ করেন ২৯ রান, আর অপর দিকে আবিদ তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি।
 
চা বিরতির পর তৃতীয় সেশনেও বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছে পাকিস্তানের এই ওপেনিং জুটি। এর আগে আলোক স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ৫ ওভার খেলা কম হয়। এ জন্য শনিবার দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হয়েছে ১১ মিনিট আগে। প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ২০৬ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলেন লিটন-মুশফিক। ৮৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।  মুশফিকুর রহিম ৮২ ও লিটন কুমাস দাস ১১৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেন।
 
মুশফিক-লিটনে আরও একটি সুন্দর দিনের অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ওভারেই লিটনকে হারালো বাংলাদেশ। এদিন ৮টি বল খেলেছেন লিটন, রান করেছেন এক। পাকিস্তানের পেসার হাসান আলীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এর মধ্য দিয়ে পঞ্চম উইকেটে মুশফিক–লিটনের ৪২৫ বলে ২০৬ রানের জুটিও ভেঙে গেল। লিটনের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসটি শেষ হলো ১১৪ রানে। ২৩৩ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় এই রান করেন তিনি।  
 
লিটনের বিদায়ে উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে যোগ দেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। কিন্তু নিজের টেস্ট অভিষেকটি রাঙাতে পারলেন না রাব্বি। ব্যক্তিগত ৪ রান হাসান আলীর দুর্দান্ত পেসে বোল্ড হন তিনি। দ্বিতীয় দিনে নিজের অষ্টম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল মুশফিক। কিন্তু নড়বড়ে নব্বইয়ের ঘরে সাজঘরে ফিরতে হল বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা মুশফিককে। ৯৯তম ওভারে ফাহিম আশরাফের বল মুশফিকের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে। ২২৫ বলে ৯১ রান করে আউট হন মুশফিক। 
 
মুশফিক ফেরার পর দলের হাল ধরেন মেহেদী-তাইজুল। ১০৬তম ওভারে সাজিদ খানকে চার মেরে দলকে ৩০০ রানের দেখা পাইয়ে দেন মেহেদী হাসান। দলীয় ৩০৪ রানে তাইজুলকে ফেরালেন শাহিন আফ্রিদি। ২৮ বলে ১১ রান করে ফিরলেন তাইজুল। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের সঙ্গ ছাড়াই ইতিবাচক ব্যাট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাইজুলের সঙ্গে ২৮ রানের জুটি ভেঙে যাওয়ার পর আবু জায়েদকে নিয়ে লড়াই করেন এ স্পিন অলরাউন্ডার। শেষদিকে হাসান আলীর জোড়া শিকারে ফিরলেন জায়েদ (৮) ও ইবাদত (০)। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের হয়ে ৫১ রানে ৫ উইকেট নেন হাসান আলী। ২টি করে উইকেট শাহিন আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। সাজিদ খান নেন ১ উইকেট।
 
বাংলাদেশ দল: 
সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, ইবাদত হোসেন।
 
পাকিস্তান দল: 
আব্দুল্লাহ শফিক, আবিদ আলী, আজহার আলী, বাবর আজম (অধিনায়ক), ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), ফাহিম আশরাফ, নওমান আলী, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, সাজিদ খান।
উত্তরণবার্তা/এসএ

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK