বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৮:২১

‘টেস্টে ভবিষ্যৎ নির্ধারণী সিরিজে’ পাকিস্তানের সামনে বাংলাদেশ

‘টেস্টে ভবিষ্যৎ নির্ধারণী সিরিজে’ পাকিস্তানের সামনে বাংলাদেশ

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের সংবাদ সম্মেলনে ১০টি প্রশ্নের ৮টিই উর্দুতে। দেশ থেকে ভার্চুয়াল কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানি সাংবাদিকদের কণ্ঠে একটি শব্দ বাবরার শুনতে হলো, ‘আহসান’! বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় অতি সহজ। উর্দু সম্পর্কে ধারণা থাকায় বোঝা গেল, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজটি অতি সহজই মনে করছেন তারা। কিন্তু সত্যিই কি এতটা সহজ হবে বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে টেস্টে হারানো? পরিসংখ্যান বলছে কাজটা সহজ। শেষ দুই টেস্টে জহুর আহমেদে বাংলাদেশ হেরেছে আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই দল হেরেছে। ফলে পাকিস্তানের জন্য কাজটা অতি সহজই।

পাশাপাশি ক্রিকেটে খুব ভালো অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। তাই চাইলেও প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙানি দিতে পারছেন না মুমিনুল হক। তবে বাবর ঠিকই স্বাগতিকদের সমীহ করলেন, ‘ওদের ঘরের মাঠ, নিজেদের কন্ডিশন। ওদেরকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কোনো দলকেই আসলে হালকা করে নেওয়ার সুযোগ নেই। ওদের কয়েকজন ক্রিকেটার নেই, দলটা তরুণ। তবে যারা আছে, এই কন্ডিশনেই তো খেলে। কাজটা তাই কঠিনই হবে (আমাদের জন্য)। কন্ডিশন বুঝতে তাই একটু সময় লাগে, বুঝতে হয় কিছুটা। ওরা অবশ্যই আমাদের কঠিন সময়ের মধ্যে ফেলে দিতে পারে।’

অতিথি অধিনায়কের কাছ থেকে সমীহ আদায় করাটা কম নয়। তবে নিজেদের সেরাটা দিয়ে ‘কঠিন’ ক্রিকেট খেলার কথাই বললেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক, ‘পাঁচ দিনে সবকটি সেশন যারা ভালো খেলবে, তারা ম্যাচ জিতবে। এখানে একেক জনের আত্মবিশ্বাস একেক রকম। আমি আমার দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। ওরা (পাকিস্তান অধিনায়ক ও সংবাদমাধ্যম) কী বলছে, তা নিয়ে আমি চিন্তা করছি না। আমি আমার পরিকল্পনাতেই অনড় থাকার চেষ্টা করছি।'  

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হচ্ছে পাকিস্তানকে দিয়ে। পাকিস্তান এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলে একটি জিতেছে, একটি হেরেছে। বাংলাদেশের শেষ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খুব বাজে গিয়েছে। সাত ম্যাচে একটি ড্র। বাকি ছয়টিতেই হার। ২০ পয়েন্ট নিয়ে ছিল তালিকার তলানিতে। এবার হোম ও অ্যাওয়েতে মোট ৬টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। প্রতি সিরিজে রয়েছে ২টি করে ম্যাচ। কিন্তু ঘরের মাঠে এবার বাংলাদেশ ৬টি ম্যাচই খেলবে এশিয়ার তিন দল পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। আর অ্যাওয়ে সিরিজ নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে।

নতুন চক্রে মুমিনুল নিজেদের কোথায় দেখতে চান? জানতে চাইলে বলেছেন, ‘যে জায়গায় এখন আছি তার থেকে ২-৩ ধাপ উপরে উঠতে পারলে আমি খুশি।’ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ৯-এ। মুমিনুলের প্রত্যাশামতো এগোতে হলে বাংলাদেশকে নিজেদের সাধ্যের বাইরে গিয়ে পারফর্ম করতে হবে। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর পুরো দলকে কখনোই একসঙ্গে পাননি মুমিনুল।

এবার সাকিব, তামিম নেই। অবসর নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া তাসকিন, মোস্তাফিজ, শরিফুলরাও নেই। ফলে মুমিনুলের হাতে অনেকটাই তরুণ ও অনভিজ্ঞ দল। এমন দল নিয়ে বাস্তবতা মেনে কতটা লড়াই করতে পারবেন মুমিনুল, মুশফিকরা। এবার অধিনায়কের কণ্ঠে আক্ষেপেই ঝরল, ‘আমাদের দলের সিনিয়ররা না থাকলে তো সমস্যা। তামিম ভাই ভালো শুরু করলে ব্যাটিং ভালো হয়। সাকিব ভাই একের ভেতর দুই। তাসকিন খুব ভালো বল করছিল। রিয়াদ ভাইও নেই। প্রায় চার খেলোয়াড় নেই। চ্যালেঞ্জিং হবে আমাদের জন্য। তবে জুনিয়রদের জন্য ভালো সুযোগ। আমাকে, মুশফিক ভাইকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।’ সঙ্গে মুমিনুল জানিয়ে রাখলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে সেটা হয়তো এই সিরিজ বা পরবর্তী সিরিজ দিয়ে বুঝতে পারবেন। অবশ্যই দ্বিতীয় চক্রের (আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপ) প্রথম সিরিজ খুব চ্যালেঞ্জিং হবে।’
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK