‘বাংলাদেশের অর্থনীতির এখন ভেতর থেকে শক্তিশালী’

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অর্থনীতির এখন ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। যার কারণে এখন বৈদেশিক ঋণ নির্ভরতা কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা। এজন্য দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। ১৬ নভেম্বর  সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের ৪০১ নম্বর কক্ষে ‘ইন সার্চ অব সাসটেইনেবল ফাইনান্স ফর ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তরা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এ সেমিনারের আয়োজন করে।

 বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক, সামাজিক এবং দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা-এই তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কোভিড চলাকালেও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন, শিল্পখাতের উন্নয়ন, গ্রামীন অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, অর্থনীতির ডিজিটালাইজেশনসহ অর্থনীতির সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের সভাপতিত্বে এবং পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অনারারি অধ্যাপক আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, করোনাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিলো অনিশ্চিত। কেননা এসময় বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে, আবার অনেক দেশে তা বেড়েছে। এই অতিমারিতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাকালে মানুষ ঘরে আবদ্ধ ছিলো। এর ফলে অর্থনীতির চাকা ধীর ছিলো। এসময় যে দেশের মানুষ ঘরের বাইরে যাওয়ার সুবিধা পেয়েছে, সে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কেননা দেশের মানুষের ঘরের বাইরে বেরোনোর ওপর প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে। এজন্য ভ্যাকসিনেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর ফলে করোনাকালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে জিডিপি বেশি।

বর্তমানে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এখন ৪৪ বিলিয়ন। এটি বাংলাদেশের শক্তি। এর ফলে এই করোনা অতিমারিতেও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। তবে আমারে ‘রেভিনিউ’ এবং ‘ট্যাক্স’ আরও বেশি আসলে হয়তো রিজার্ভের টাকায় হাত দিতে হতো না। তাই আমাদের দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়াতে হবে। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও অর্থনীতিবিদ ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক, সামাজিক এবং দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা-এই তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কোভিড চলাকালেও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিলো। প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং এর ওপর আলোচনা শেষে শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অধ্যাপক আতিউর রহমান।
উত্তরণবার্তা/এআর