সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৯:১৩
ব্রেকিং নিউজ

ডিমের খোসার উপকারিতা এবং এর বিভিন্ন ব্যবহার

ডিমের খোসার উপকারিতা এবং এর বিভিন্ন ব্যবহার

সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ 
 
ডিম ছাড়া সকালের নাশতার কথা ভাবাই যায় না। ডিম সহজলভ্য ও সহজপাচ্য একটি খাবার। শিশু থেকে বয়স্ক সবাই ডিম ও ডিমের তৈরি যে কোন রান্না খুবই পছন্দ করে। ডিমের যেমন রয়েছে অনেক গুণ ঠিক তেমনি এর খোসারও রয়েছে অনেক উপকারিতা। চলুন জেনে নিই ডিমের খোসার গুণাগুণ। 
 
ডিমের খোসায় রয়েছে ৩টি স্তর – প্রথম স্তরটি শক্ত চকের মত। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ক্রিস্টাল (Calcium carbonate crystals)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরে আছে কেরাটিন নামক প্রোটিন যা মানুষের চুলে পাওয়া যায়। এছাড়া আছে ম্যাগনেশিয়াম, গ্লুকোসামিন, হায়ালুরনিক এসিড, এবং কোলাজেন। এসব উপাদান মানুষের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানসহ অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করা যায়।
 
ডিমের খোসার নানান ব্যবহার
১। ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি জনিত বিভিন্ন অসুখে ডিমের খোসার ব্যবহার অত্যন্ত সুফলদায়ক। ক্যালসিয়াম শারীরিক বৃদ্ধি এবং হাড়ের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটা হৃদপিন্ডের ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে, মাংসপেশীর কাজে সাহায্য করে এবং শরীরে ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে।
 
২। হাড়ের রোগের চিকিৎসা
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং অস্টিওপরসিস (Osteoporosis) রোগ চিকিৎসায় সাহায্য করে। ডিমের খোসায় থাকা ক্যালসিয়াম, স্ট্রনটিয়াম এবং ফ্লোরিন হাড় গঠন এবন কার্টিলেজ বৃদ্ধি করে।
 
৩। দাঁতের এনামেলকে সুরক্ষা দেয়
ডিমের খোসার গুঁড়ার সাথে গ্লিসারিন সলিউশন মিশিয়ে দাঁতে ব্যবহার করলে দাঁতের নতুন এনামেল বৃদ্ধি করে। দাঁতের প্রস্থেসিসে ডিমের খোসা ব্যবহার হয়। তাই বলা হয় ডিমের খোসা দাঁতের জন্য সবচেয়ে ভাল খাবার।
 
৪। ডিমের খোসার পর্দার ব্যবহার
আর্থ্রাইটিস বা বাত, লুপাস, গেঁটে বাত, এবং পিঠের ব্যথার চিকিৎসায় ডিমের খোসার পর্দা ব্যবহৃত হয়।
 
৫। কম্পোস্ট সার
কমপোস্ট সার হিসাবে ডিমের খোসা সরাসরি মাটিতে ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহারে গাছে পোকার আক্রমণ বন্ধ হয়ে যাবে।
 
৬। ডিশ মাজা
ডিশ ধোয়ার লিকুইড সোপের সাথে ডিমের খোসার গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করলে এতে থাকা কেমিক্যালের তীব্রতা কমে যায় এবং বাসন কোসনের কঠিন দাগ দূর হয়ে ঝকঝকে হয়ে উঠে।
 
৭। রূপচর্চায় ডিমের খোসা
রূপচর্চায়ও ডিমের খোসার ব্যবহার হয়। ডিমের সাদা অংশের সাথে ডিমের খোসার গুঁড়া মিলিয়ে মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এই মাস্ক ত্বককে টাইট এবং বলিরেখা মুক্ত করে।
 
৮। পোষা প্রাণীর খাবারে
ডিমের খোসার গুঁড়া সরাসরি কুকুর ও পাখির খাবারে মিশিয়ে দিলে তা এসব প্রাণীর দাঁত, নখ, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
 
ডিমের খোসার গুড়া তৈরির প্রণালী
এক ডজন ডিমের খোসা নিন। এটাকে জীবাণুমুক্ত করতে ফুটন্ত পানিতে ২ মিনিট ফুটিয়ে তুলে ফেলুন। সারা রাত এটাকে শুকাতে দিন। পরদিন একটি পাতিলে শুকনো খোসাগুলো কিছুক্ষণ গরম করুন। এবার ব্লেন্ডার বা গ্রাইন্ডারে গুড়া করে নিন। এই পাউডার বাতাস নিরোধক কৌটায় ভরে ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে রাখুন। ফ্রিজে রাখবেন না।
 
লেখক: খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK