সরকার পতনের স্বপ্নের নেশা থেকে বেরিয়ে আসুন ফখরুলকে নানক

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পতন করার স্বপ্নের নেশা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) সদর দপ্তর ঢাকা কেন্দ্র ও ইআরসির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি একথা বলেন।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘তিনি বলেছেন এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন সরকার, এই সরকার দমন-নিপীড়ন করছে? মির্জা ফখরুল সাহেব অনুরোধ করবো, আপনাদের এই স্বপ্ন থেকে, স্বপ্নের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই সরকারের ৪২ দিনের মাথায় বিডিআর বিদ্রোহের মতো ষড়যন্ত্র করে সরকারকে উৎখাত করা যায় নাই। এই সরকারকে শাপলা চত্বরে উগ্রবাদী-মৌলবাদীদের জমায়েত করে ভেবেছিলেন পরের দিন সকাল বেলা শেখ হাসিনার সরকার আর এই দেশে থাকবে না। কিন্তু সরকার উৎখাত করা যায় নাই।’

‘আপনারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন। আর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন বলেই জনগণের ওপর জীঘাংসার প্রতিরোধ নেয়ার জন্য দেশ করোনায় আক্রান্ত হলেও আপনারা একটিবার এক ছটাক চাল নিয়েও মানুষের দরজায় গেলেন না। একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে কি দায়িত্ব পালন করেছেন?’ প্রশ্ন রাখেন নানক। এ সময় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের আদর্শিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র আছে, ষড়যন্ত্র থাকবে। সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার একমাত্র শক্তিই হলো সংগঠন। তাই আমাদের যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মানসিকতা নিয়ে আদর্শবাদী দল হিসাবে, আদর্শিক চিন্তার কর্মী হিসাবে দল করতে হবে।

১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেদিন যারা পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন তৈরি করতে চেয়েছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করেছিল; সেই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা খুনি মোশতাক এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট জেনারেল জিয়ার মতো মানুষেরা।’

তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধুকে একদিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা যখন বাঙ্কারে যুদ্ধ করছি, সেই যুদ্ধকে যারা দুই কুকুরের লড়াই হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল, সেই তারা।’ নানক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত, তখন সেই মুক্তিযুদ্ধের শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয় বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চিন্তাচেতনাকে বিভক্ত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি করে গণবাহিনী সৃষ্টি করা হয়েছিল। ইতিহাসের এই দায় এড়ানোর জন্য জাসদের নেতৃবৃন্দ কোন যুক্তি ধোপে টিকবে না।’১৫ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মিথ্যা জন্মদিন পালনের উৎসব করে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নানক।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশকে আর পেছনে টেনে রাখতে পারবে না। সকল লোভ-লালসাকে পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে ভালোবাসা তা আর কোন মানুষের মধ্যে দেখা যায় না। তিনি তার পরিবারেরও চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন দেশের মানুষেদের। বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিকে সব সময় ঘৃণা করতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে ভালোবেসে দুর্নীতির উর্ধ্বে থেকে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।’

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপি বলেন, ‘বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। খুনিদের ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা হবে। একই সাথে জাতীয় চার নেতার খুনিদেরও বিচার করা হবে।’ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু দেশে যে উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করে গিয়েছিলেন তার সেই ভিত্তির ওপরই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
উত্তরণবার্তা/এআর