উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : তিন খুনের দায়ে চার খুনির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এই চার খুনি হলেন, খোকন আকন্দ, আল আমিন, আব্দুল লতিফ ও শহিদুল ইসলাম শেখ। এদের মধ্যে প্রথম দুজন ছিনতাইকারী। বাকি দুজনের একজন স্ত্রী হত্যা এবং অপরজন শিশু ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দণ্ডিত। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দণ্ডিতদের জেল আপিল খারিজ করে ফাঁসির রায় বহাল রাখে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সোমবার এই রায় দেন। আদালত বলেছে, দণ্ডিতরা যে ধরনের অপরাধ সংঘটন করেছেন তাতে এদের কোন ধরনের অনুকম্পা পাওয়ার সুযোগ নাই। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন, বিচারপতি মো. ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মাইক্রোবাস ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল চালককে হত্যা করেন দুই ছিনতাইকারী। যমুনা সেতুর কাছাকাছি রাত্রিবেলা চালককে হত্যা করেন আসামি খোকন আকন্দ ও আল আমিন মিয়া। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১১ সালে সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এই দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০১৭ সালে হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করে আসামিদের দণ্ড বহাল রাখে। এর বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন আসামিরা। ঐ জেল আপিলের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে ফাঁসির রায় বহাল রাখে। দণ্ডিতদের মধ্যে খোকন আকন্দের বাড়ি বগুড়ার রহবল পূর্ব পাড়া গ্রামে। আর আল আমিনের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের হাসানপুরে।
এদিকে আটবছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ডুমুর মুসা পশ্চিমপাড়া গ্রামের প্রতিবেশী শাহিদুল ইসলাম শেখের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিবেশী আট বছরের শিশুকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও গলাটিপে হত্যা করেন শাহিদুল। ঐ রাতেই গ্রামবাসীরা তাকে আটক ও শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি শাহিদুলকে মৃত্যুদন্ড দেয়া সিরাজগঞ্জের আদালত। ২০১৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট ফাঁসির রায় বহাল রাখে। এ রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করে আসামি। আপিল বিভাগ তা খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আসামির।
অপরদিকে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী আব্দুল লতিফের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। দণ্ডিতের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বট বাটা গ্রামে। যৌতুকের দাবিতে সে স্ত্রীকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০১২ সালে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০১৭ সালে হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় বহাল রাখে। এর বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন আসামিরা। আপিল বিভাগ জেল আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ ও আসামি পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত কৌসুলি সৈয়দ মোহাইমেন বকশ ও শিরিন আফরোজ শুনানি করেন।
উত্তরণবার্তা/এআর