উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। শীত মৌসুমে বাংলাদেশেও দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ঢেউ থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতিসহ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। তবে বাড়তি সতর্কতায় সরকারের নানা নির্দেশনার পরেও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা ও মাস্ক-গ্লাভস ব্যবহারে এখনও উদাসীন সিলেটের অধিকাংশ মানুষ। এ কারণে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য বিভাগের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া স্বাক্ষরিত কোভিট-১৯ সম্পর্কিত দৈনিক বুলেটিনে জানানো হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের চার জেলায় নতুন করে করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে কোনো মৃত্যু না হলেও এখন পর্যন্ত বিভাগের চার জেলায় করোনায় মারা গেছেন ২৮৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮১৫ জনে।’
আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা সিলেট জেলায়। এ জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৯৯৯ জন। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ২ হাজার ৪৩২ জন, হবিগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ৮৬২ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ১ হাজার ৮১০ জন আক্রান্ত হন। মৃতদের মধ্যে সিলেট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৭৫ জনের। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ২৫ জন, মৌলভীবাজার জেলায় ২২ জন এবং হবিগঞ্জ জেলায় ১৬ জন মারা গেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি সব সময় মেনে চলার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই। তবুও জনসাধারণ মাস্ক পরা নিয়ে উদাসীন। এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে গতি আনার পরামর্শ তাদের।
শুক্রবার নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, শাহীঈদগাহসহ একাধিক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। কারও মুখে আছে মাস্ক; আবার কারও ঝুলছে থুতনিতে। অনেকে আবার মাস্ক পকেটে নিয়ে ঘুরছেন, তবে তা মুখে পরছেন না। বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, বিপণি-বিতানে মাস্ক ছাড়াই জনসাধারণ প্রবেশ করতে পারছেন। নেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও।
এ সময় কথা হয় একাধিকজনের সঙ্গে। মাস্ক ব্যবহারে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি কম বলে স্বীকারও করেন তারা। তবুও কেন মাস্ক ছাড়া চলাচল করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য না করেই চলে যান অনেকে। আবার কেউ কেউ বলেন, ‘গরম লাগছে, তাই মাস্ক মুখে নেই। তবে পকেটে আছে।’
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘শীতে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবিলায় আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরিধানের বিকল্প নেই। তবে বর্তমানে জনসাধারণের মাঝে মাস্ক পরার বিষয়ে উদাসিনতা রয়েছে, এজন্য তাদের আরও সচেতন হতে হবে।’
এদিকে, সিলেট নগরের পাশাপাশি উপজেলার সদর এবং গ্রামের বাজারেও সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘনও হচ্ছে। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি মাস্ক পরতে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে প্রচারণাও চলমান আছে।
উত্তরণ বার্তা/এআর